কাতারে নিযুক্ত ফিলিপাইনি ‘গৃহকর্মীদেরকে তাদের মনিবের নির্যাতন থেকে উদ্ধার’ ইস্যুতে ‘জ্বলন্ত মন্তব্য’ করায় ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতকে দুদিনের মধ্যে দুবার তলব করেছে কাতার সরকার।
কাতার সরকারের অভিযোগ, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য এবং কাতারে নিযুক্ত ফিলিপাইনের কুটনীতিকদের ‘অনুপযুক্ত আচরণ’ কাতারের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরুপ। শনিবার কাতার সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়।
এর আগে শুক্রবারও একই কারণে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছিল।
গত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয় যে, কাতারের ফিলিপাইন দূতাবাস কুটনৈতিক যানবাহনে করে কাতারে নিযুক্ত গৃহকর্মীদেরকে তাদের নিয়োগদাতাদের কাছ থেকে পালিয়ে আসতে সহায়তা করছে।
ফিলিপাইনের কর্মকর্তারা এই ‘গোপন’ কর্মকাণ্ডকে ‘উদ্ধার অভিযান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এবং এই অভিযান কীভাবে চালানো হচ্ছে তার একটি ভিডিও পোস্ট করেন সামাজিক গণমাধ্যমে।
ওই মন্তব্য এবং ভিডিওর কারণে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত রেনাটা পেড্রো ভিলাকে শুক্রবারই তলব করে কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সেসময় তার হাতে দুটি প্রতিবাদ বক্তব্য ধরিয়ে দেওয়া হয়।
কুয়েতের দুটি দৈনিক পত্রিকার সঙ্গেও ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত কাতারে নিযুক্ত ফিলিপাইনের গৃহকর্মীদেরকে তাদের মনিবদের নির্যাতনের হাত থেকে উদ্ধারে অভিযান চালানোর কথা বলেন। এবং গত একমাস ধরে একটি বিশেষ উদ্ধারকারী দল কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন।
ওই দলে ৭ জন সদস্য রয়েছে এবং জরুরি কোনো ক্ষেত্রে তারা কারো পূর্বঅনুমতি ছাড়াই উদ্ধার অভিযান চালান। যেসব ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎপরতার জন্য অপেক্ষা করা সম্ভব হয় না।
উদ্ধার অভিযান শেষে নিয়োগদাতার কাছে অর্থ চাওয়া হয় ওই উদ্ধারকৃত গৃহকর্মীদের পাওনা বেতন মেটানো এবং দেশে ফেরার খরচ যোগানোর জন্য।
শনিবার এসব মন্তব্য পত্রিকায় প্রকাশের পর কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ফিলিপাইন দূতাবাসের এই কর্মকাণ্ডকে বেআইনী বলে আখ্যায়িত করে এবং একে আইনের আওতায় আনা হবে বলে বিবৃতি দেয়।
এরপর শনিবার বিকেলেই ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের নিজ দেশের নাগরিকদেরকে সহায়তা করার জন্য কুয়েত কর্তৃপক্ষের সহায়তার দরকার নেই।
সম্প্রতি ফিলিপাইন সরকার নির্যাতনের অভিযোগে কুয়েতে ফিলিপাইন থেকে গৃহকর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। আর এ কারণেই হয়তো কুয়েত কর্তৃপক্ষ তাদের রাগ প্রকাশ করেছে।
আগামী রমজান মাসের আগেই ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে কুয়েত যাবেন গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা প্রদান সংক্রান্ত একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করার জন্য।