কেস ফলোআপঃ ১০
ঘটনার তারিখ ও সময়ঃ ২৫ এপ্রিল, ২০১৬ সময় অনুমান বিকাল ৫.২৫ টা
ঘটনাস্থলঃ কলাবাগান থানাস্থ ৩৫ নং উত্তর ধানমন্ডি ৩য় তলা ।
বাদীঃ মিনহাজ মান্নান ইমন (৫০) (ভিকটিম জুলহাস মান্নানের বড় ভাই)
মামলা নং ও তারিখঃ কলাবাগান থানার মামলা নং-৮ তারিখঃ ২৫ এপ্রিল, ২০১৬
ধারাঃ ৩২৪/৩০৬/৩০২ পিসি।
তদন্তকারী সংস্থাঃ কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ, ডিএমপি।
অভিযোগ পত্র নং: কলাবাগান থানার অভিযোগ পত্র নং ৩৪, তারিখ-১২ মে, ২০১৯ ইং
ধারাঃ সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০১৯ (সংশোধনী/২০১৩) এর ৬ (১) (ক) (অ)/ ৬ (২)/৮/৯/১০/১২
মোট অভিযুক্তঃ ১৩ জন।
মোট সাক্ষীঃ ২৪ জন।
মোট নিহতঃ ২ জন।
মোট আহতঃ ২ জন।
মোট আলামতঃ ২১ টি।
১৬৪ ধারায় জবানবন্দিঃ ০৪ জন ।
এজাহারের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
বাদী থানায় অভিযোগ করেন যে, ২৫ এপ্রিল,২০১৬ ইং তারিখ বিকাল অনুমান ৫.১৫ টায় তার ছোট ভাই জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু তন্ময় অফিস হতে বাসায় ফেরেন। অনুমান ১০ মিনিট পর অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন লোক যাদের বয়স অনুমান ২০-২৫ বছর এবং তাদের প্রত্যেকের পরনে একই রঙের টি শার্ট এবং ব্যাগ ঝুলানো ছিল, পার্সেল ডেলিভারীর কথা বলে তারা কলিং বেল বাজায়। জুলহাস মান্নান দরজা খোলার সাথে সাথে অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন দ্রুত ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। জুলহাস মান্নান ও বন্ধু তন্ময়কে তাদের সাথে থাকা চাপাতি দ্বারা এলোপাতারিভাবে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিচে থাকা গেটের দারোয়ান পারভেজ দুষ্কৃতিকারীদের বাধা দিলে তারা তাকেও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে। দুষ্কৃতিকারীরা পরবর্তী সময়ে রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডিউটিরত পুলিশের গাড়ীর মুখোমুখি হলে এএসআই মমতাজ উদ্দিন পিপিএম একজনকে জাপটিয়ে ধরলে তারা উক্ত এএসআইকে জখম করে পালিয়ে যায়।
তদন্তঃ
বহুল আলোচিত ডাবল মার্ডার হত্যা মামলার তদন্তভার গ্রহন করে ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ। দীর্ঘ তদন্তের পর অত্র মামলার ঘটনার সাথে জড়িত ১৩ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলেও ৫ পরিচয় উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ ১৩ জনের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় জানতে পারে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ। যে ৫ জনের পরিচয় উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি পরবর্তী সময়ে তাদের পরিচয় পাওয়া গেলে অথবা গ্রেফতার করা সম্ভব হলে অত্র মামলায় তাদের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগ পত্র দাখিল করা হবে। তারা সবাই উগ্রপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী আনসার আল ইসলাম (আনসার উল্লাহ বাংলা টিম) এর সক্রিয় সদস্য। সনাক্তকৃত ৮ জনের মধ্যে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং ৪ জনই বিজ্ঞ আদালতে কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। বাকী ৪ জন পলাতক আছে।
গ্রেফতারকৃত ৪ জন হলোঃ
১। মোজাম্মেল হোসেন@সায়মন@শাহরিয়ার ।
২।মোঃ আরাফাত রহমান (সাংগঠনিক নাম-সিয়াম@সাজ্জাদ@শামস)।
৩। শেখ আব্দুল্লাহ (সাংগঠনিক নাম- জুবায়ের@জায়েদ@জাবেদ@আবু ওমায়ের)।
৪। আসাদুল্লাহ (সাংগঠনিক নাম- ফয়জুল@ফয়সাল@ফকরুল@জাকির@সাদিক)।
পলাতক ৪ জন হলোঃ
১। সৈয়দ মোঃ জিয়াউল হক @ মেজর জিয়া (সাংগঠনিক নাম-সাগর@বড় ভাই@ইশতিয়াক)
২। আকরাম হোসেন (সাংগঠনিক নাম-আবির@আদনান@হাসিবুল@আব্দুল্লাহ)
৩। সাব্বিরুল হক চৌধুরী (সাংগঠনিক নাম-কনিক@আফনান@সাদমান)
৪। মাওলানা জুনায়েদ আহমেদ @ মাওলানা জুনেদ আহম্মেদ@জুনায়েদ (সাংগঠনিক নাম- হায়দার@হাকতাব@জুনায়েদ@তাহের)
মামলার বর্তমান অবস্থাঃ আজ ৩১ আগস্ট,২০২১ ( মঙ্গলবার) ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ মামলায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও দুজনকে খালাস প্রদান করে রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ছয় আসামি হলেন- সৈয়দ মোঃ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (সাংগঠনিক নাম-সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে ইশতিয়াক), আকরাম হোসেন (সাংগঠনিক নাম-আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আব্দুল্লাহ), মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার , মোঃ আরাফাত রহমান (সাংগঠনিক নাম-সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস), শেখ আব্দুল্লাহ (সাংগঠনিক নাম- জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের) ও আসাদুল্লাহ (সাংগঠনিক নাম- ফয়জুল ওরফে ফয়সাল ওরফে ফকরুল ওরফে জাকির ওরফে সাদিক)। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের মধ্যে পলাতক চাকরিচ্যুত সৈয়দ মোঃ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন।
আর খালাস পাওয়া দুজন হলেন- সাব্বিরুল হক চৌধুরী (সাংগঠনিক নাম-কনিক ওরফে আফনান ওরফে সাদমান) ও মাওলানা জুনায়েদ আহমেদ ওরফে মাওলানা জুনেদ আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদ (সাংগঠনিক নাম- হায়দার ওরফে হাকতাব ওরফে জুনায়েদ ওরফে তাহের)। তাঁরা দুজনই পলাতক।