কেস ফলো-আপঃ ৮
ঘটনার তারিখ ও সময়ঃ ১ মার্চ, ২০১৮ বেলা অনুমান ১২.০০ টা
ঘটনাস্থলঃ ডিএমপি’র কোতয়ালী থানাধীন রেবতী ম্যানশনের দক্ষিণে ২/১ কোর্ট হাউজ স্ট্রীট এর সামনে।
বাদীঃ মোসা. হেনা বেগম (ভিকটিমের মাতা)
মামলা নংঃ কোতয়ালী থানার মামলা নং-০২, তারিখঃ ০১/০৩/২০১৮ ইং, ধারা: ৩০২/১০৯/৩৪ পিসি ।
অভিযোগ পত্র নংঃ কোতয়ালী থানার অভিযোগ পত্র নং- ৩৬১ তারিখ: ২৬/১১/২০১৮ ইং এবং ৩৬১/ক তারিখঃ ২৬/১১/২০১৮ ইং, ধারা: ৩০২/১০৯/৩৪ পিসি।
তদন্তকারী সংস্থাঃ কোতয়ালী থানা, ডিএমপি, ঢাকা।
মোট অভিযুক্তঃ ১৩ জন ।
আলামতঃ চাকুসহ মোট ২টি
মোট সাক্ষীঃ ৩৫ জন ।
মোট নিহতঃ ১ জন (রনক )।
এজাহারের সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ বাদীনি মোছাঃ হেনা বেগম থানায় অভিযোগ করেন যে, তার ছেলে রনক (১৮) আজিমপুর কবরস্থান নিউ পল্টন লাইন স্কুল এন্ড কলেজের এইচএসসি বানিজ্য বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। গত ইং ০১/০৩/১৮ খ্রিঃ তারিখ সকাল অনুমান ০৯:০০ টায় ভিকটিম রনক বন্ধুদের সাথে তাঁতীবাজার হলি খেলা অনুষ্ঠানে যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়। বেলা অনুমান ১২:৪৫ টায় রনকের বন্ধু আরিফ ফোনে বাদীনিকে বলে যে, রনকের অবস্থা খুবই খারাপ সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। বাদীনি তাৎক্ষনিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়ে তার ছেলে রনকের মরদেহ হাসপাতালের বেডে দেখতে পায়। হাসপাতালে থাকা ভিকটিমের বন্ধু আরিফসহ অন্যান্য বন্ধুদের সাথে কথা বলে বাদীনি জানতে পারে যে, গত ইং ০১/০৩/১৮ খ্রিঃ তারিখ ১২:০০ টার সময় বাদীনির ছেলে ও তার ৭ বন্ধু মিলে তাঁতীবাজারে হলি খেলা দেখতে আসে। তাঁতীবাজার থেকে শনি মন্দিরের সামনে আসলে অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি তার ঘাড়ে হাত দিয়ে তাকে উত্তর দিকে নিয়ে যায়। কোতয়ালী থানার রেবতি ম্যানশনের দক্ষিনে ২/১ কোর্ট হাউজ স্ট্রীট এর সামনে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০ জনের একটি গ্রুপ ভিকটিম রনকের কোমরসহ শরীরের বিভন্ন স্থানে ধারালো চাকু দ্বারা উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। ভিকটিম রনক দৌড় দিয়ে পাশে একটি এ্যাডভোকেটের চেম্বারে যায়। সেখান থেকে বের হয়ে সে একটি টং দোকানের উপর গিয়ে পড়ে যায়। এরপর ভিকটিমের বন্ধু ফাহিম, আরিফ ও আরও ২/৩ জন মিলে ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ন্যাশনাল হাসপাতালের চিকিৎসক ভিকটিমের অবস্থা গুরুতর দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিতে বলে। ভিকটিমের বন্ধু ফাহিম, আরিফসহ আরো ৩/৪ জন মিলে ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে মৃত ঘোষনা করে।
তদন্তঃ মামলার ভিকটিম ও অভিযুক্তরা পরস্পর বন্ধু এবং ফেসবুক এর মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে ছাত্র, গেরেজ ম্যাকানিক ও দোকানের কর্মচারী ছিল। ভিকটিম রণকের সাথে পলি আক্তার তুহুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল যা তাদের উভয়ের অভিভাবকদের চাপে ভেঙ্গে যায়। পরবর্তী সময়ে পলি আক্তারের সাথে ইয়াছিন আহম্মেদ ওরফে ইমন এর প্রেমের সম্পর্ক হয়। উক্ত সম্পর্কের কথা রণক জানতে পারলে, রণক এবং ইমন ফেসবুক ও মোবাইলের মাধ্যমে একে অপরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। উক্ত ঘটনার রেশ ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীরা রনককে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমানে ঘটনার সাথে ১৩ জনের সম্পৃক্ততার প্রমান পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১ জন পলাতক আছে।
গ্রেফতারকৃত ১২জন হলোঃ ১। রিয়াজ আলম ওরফে ফারহান (১৯), পিতাঃ এনায়েত আলম, মাতাঃ পাকিজা আলম, সাং-পাইনারচর,(খাশমহল, বালুচর) থানাঃ সিরাজদিখান, জেলাঃ মুন্সিগঞ্জ, এপি- ১০ নং এসকে দাস রোড, থানাঃ গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
২। মোঃ ইয়াছিন ইমন (২০), পিতা- আব্দুল মাজেদ, মাতা- মোসাঃ শাহনাজ, সাং-৭৯/১/ই ডিস্ট্রিলারী রোড, থানা- গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
বাকী ১০ জন কিশোর অপরাধী হওয়ায় তাদের নাম প্রকাশ করা হলো না।
পলাতকঃ ১ জন, কিশোর অপরাধী হওয়ায় তার নাম প্রকাশ করা হলো না।
মামলার বর্তমান অবস্থাঃ মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন।