আদাকে উপকারি খাবার হিসেবেই আমরা জানি। ঠান্ডা লাগা, ব্যথা কমানো, হজমের সমস্যা ছাড়াও আদার প্রভূত গুণ নিয়ে চিকিত্সক, ডায়টিশিয়ান, আয়ুর্বেদরা বার বার বলেছেন। তবে সেই সঙ্গেই আরও একটি বিষয় চিকিত্সকরা বলে থাকেন। আদা খাওয়া উপকারি হলেও কিছু কিছু সময় অত্যন্ত উপকারি এই খাবারই হয়ে উঠতে পারে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। জেনে নিন কোন কোন ক্ষেত্রে আদা ক্ষতিকারক হতে পারে।
প্রেগন্যান্ট: আদার মধ্যে এমন অনেক পদার্থ থাকে যা পেশীর স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ও হজমে সাহায্য করে। প্রেগন্যান্সিতে বেশি আদা খেলে তা পেশীর সংকোচন ঘটিয়ে প্রিটার্ম লেবরের সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে শেষ ত্রৈমাসিকে আদা না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে চিকিত্সকরা। প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকে মর্নিং সিকনেস কাটাতে অল্প আদা খেতে পারেন। তবে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে।
রক্তের ডিজঅর্ডার: আদা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। ওবেসিটি বা ডায়াবেটিসের সমস্যায় তাই আদা খুবই উপকারি। আবার হিমোফিলিয়ার সমস্যা থাকলে আদার এই গুণ নেগেটিভ প্রভাব ফেলতে পারে। হিমোফিলিয়া বংশগত ডিজঅর্ডার। ফ্যাক্টর এইট (ক্লটিং প্রোটিন)-এর অনুপস্থিতিতে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না। ছোটখাট কাটাছেঁড়া থেকে অনেক বেশি রক্তপাত, এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। হিমোফিলিয়ার ওষুধের সঙ্গে আদা খেলে তা ওষুধের প্রভাবে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
কোনও বিশেষ ওষুধ: হাইপারটেনসন বা ডায়াবেটিসের ওষুধ খেলে আদা খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভাল। আদা রক্তকে পাতলা করে রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। তাই সাধারণ ভাবে আদা খাওয়া উপকারি হলেও অ্যান্টি-কোয়াগুলান্ট, বিটা-ব্লকারস বা ইনসুলিনের মতো ওষুধের প্রভাব কমিয়ে দিতে পারে আদা।
আন্ডারওয়েট: যদি আপনি ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করে থাকেন তা হলে আদাযুক্ত খাবার বা আদা চা খাওয়া এড়িয়ে চলুন। আদার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে। যা পাকস্থলীর পিএইচ মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে পৌষ্টিকতন্ত্রকে উত্তেজিত করে তোলে। খিদে কমিয়ে ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে আদা। প্রতি দিন আদা খেলে তা মেদ ঝরানোর পাশাপাশি চুল পড়া ও অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যাও ডেকে আনতে পারে। তাই ওজন অতিরিক্ত কম হলে বা ওজন বাড়াতে চাইলে বেশি আদা না খাওয়াই ভাল।