জীবনের কোনো না কোনো সময় কোমরব্যথায় ভোগেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কোমরব্যথা কেন হয়? এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. নাহিদুজ্জামান সাজ্জাদ। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কোমরব্যথার প্রধান কারণ কী?
আসলে কোমরব্যথা একটি প্রচলিত সমস্যা। কোমরব্যথায় ভোগেনি এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যায়। দেখা যায়, ৭০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ কখনো না কখনো কোমরব্যথায় আক্রান্ত হয়েছে। অনেক কারণেই কোমরব্যথা হয়। আমরা বলি দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, ভারী কোনো জিনিস তুলতে যাওয়া, শোয়ার জায়গা অসমতল হওয়া ইত্যাদি কারণে কোমরব্যথা হয়।
এ ছাড়া বয়সভেদে বিভিন্ন ধরনের কোমরব্যথা হতে পারে। যারা একটু বয়স্ক, তাদের ক্ষেত্রে লাম্বার স্পনডোলসিস হয়। হাড় ক্ষয়জনিত কারণে কোমরব্যথা হয়। অনেক সময় হাড়ের জায়গা বদল হয়ে কোমরব্যথা হয়।
বিশেষ করে অস্টিওপরোসিস হয়ে যদি কশেরুকাগুলো বসে যায়, ভেঙে যায়, সে ক্ষেত্রে কোমরব্যথা হতে পারে। এটি হলো প্রবীণদের ক্ষেত্রে। অনেক সময় কোমরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের জন্যও কোমরব্যথা হতে পারে। যেমন—কোমরে যদি টিবি হয়, টিউবার কলোসিস যদি কশেরুকাগুলোতে আক্রমণ করে, অনেক সময় অস্টিওমায়ালাইটিস হতে পারে। নানা ধরনের ইনফেকশন যদি ওখানে দানা বাঁধে, তাহলেও কোমরব্যথা হতে পারে।
অনেক সময় কোমরে বিভিন্ন ধরনের টিউমার হতে পারে। মারাত্মক টিউমার। এমনকি ক্যানসার সেখানে গিয়ে আক্রমণ করতে পারে। সে ক্ষেত্রেও মারাত্মক ধরনের কোমরব্যথা হতে পারে।
এর বাইরে কিছু কোমরব্যথা রয়েছে। এর সংখ্যা আমাদের দেশে কম। কিন্তু এটি আবার দীর্ঘমেয়াদি। আমরা বলি, প্রদাহজনিত কোমরব্যথা। এই কোমরব্যথা সাধারণত তরুণ বয়সে বেশি হয়। যেমন—স্পনডাইলোআর্থ্রাইটিস, সোরিয়াটিক আর্থ্রাটিস। এই ধরনের কিছু রোগ রয়েছে। এসব রোগের কারণে যদি কোমরব্যথা হয়, কোমরের সঙ্গে জয়েন্টগুলোও ব্যথা হয়। এই রোগগুলো সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি হয়। এটি হলো বাতজনিত ব্যথা। খবর এনটিভি।