পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে জাপানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন। বিন্দুমাত্র না দমে উত্তর কোরিয়াও জানিয়েছে, তারা এক আঘাতে গুঁড়িয়ে দিতে পারে আমেরিকার সেই যুদ্ধজাহাজ। তার উপরে রয়েছে কিম জং উনের নির্দেশে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা। দু’দেশের মুহুর্মুহু যুদ্ধের হুঙ্কারের মধ্যেই মঙ্গলবার পিয়ংইয়ংয়ের অভিযোগ, এ বার কোরীয় উপদ্বীপের উপরে চক্কর কাটতে দেখা গিয়েছে আমেরিকার দু’টি বোমারু বিমানকে। কিমের হুঁশিয়ারি, এ ভাবে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে ওই এলাকাটিকে পরমাণু যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ওয়াশিংটনই।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু হানার হুমকি রুখতেই সোমবারের এই যৌথ অনুশীলন। আমেরিকার সঙ্গে এই মহড়ায় যোগ দিয়েছে দক্ষিণ কেরিয়া ও জাপানের বায়ুসেনাও। পিয়ংইয়ংয়ের অভিযোগ, আমেরিকা তাদের বারবার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। অথচ তারাই সামরিক মহড়ার আড়ালে লক্ষ্য বস্তুকে নিশানা করে পরমাণু বোমা ফেলার অনুশীলন চালাচ্ছে। আর আমেরিকার এই উস্কানিতেই কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা উত্তরোত্তর বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতেই দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন সেনা ও দূতাবাস কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সপ্তাহের শুরুতেই সোলে পৌঁছেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র ডিরেক্টর মাইক পম্পিও।
অথচ, সোমবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আপত্তি নেই তাঁর। কিছু দিন আগে চিনও বলেছে, উত্তর কোরিয়ার সমস্যা মেটাতে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে দেশটিকে। তবে তা চিনের একার কাজ নয়। নির্বাচনী প্রচারের সময়েই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে কিমের সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। সোমবারও তিনি জানান, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে কিম জং উনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে কোনও বাধা নেই তাঁর। তবে তার ‘সঠিক পরিস্থিতি’ তৈরি হলে তবেই।
একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘‘যদি আমার সত্যিই ওঁর সঙ্গে দেখা করার প্রয়োজন হয়, করব। তবে উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে তবেই।’’ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যে পিয়ংইয়ংয়ের প্রতি আমেরিকার কৌশল বদলের ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও কার্যক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। বরং দু’দেশের দ্বন্দ্ব উসকে দিয়ে ও দিনই আমেরিকার দু’টি সুপারসনিক বি-১বি বোমারু বিমানকে চক্কর কাটতে দেখা গিয়েছে কোরীয় উপদ্বীপের উপর। তা হলে কোন পরিস্থিতিতে ট্রাম্প-কিম বৈঠক সম্ভব? হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসারের কথায়, ‘‘সেই সম্ভাবনা দূর অস্ত্।’’