ক্রেডিট কার্ড মানেই মধ্যবিত্তদের কাছে আতঙ্কের বিষয়। অকারণ অর্থ নষ্টের ভয়ে ঝুঁকি নিতে চান না তাঁরা। অনেকের কাছেই ক্রেডিট কার্ড রীতিমতো মাথা ব্যথার কারণ। কিন্তু ক্রেডিট কার্ড কি সত্যিই আপনার এতবড় শত্রু? না, বাস্তবে কিন্তু তেমনটা নয়। আসলে এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু ভুল ধারণা মানুষের মনে বাসা বেঁধেছে। সেগুলি কেটে গেলে দেখবেন, সঠিকভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ও উপকৃত হয়ে আপনার মুখে হাসিই ফুটেছে।
১. কেনাকাটার ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক অফার, রিওয়ার্ড পয়েন্ট তো থাকেই, সেই সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডের বিল জমা দেওয়ার জন্য অন্তত ৫০ দিন সময় দেওয়া হয়। যার ফলে আপনি নিজের সুবিধা মতো সেভিংস বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা জমা দিতে পারেন। ধরুন, চলতি মাসের ২০ তারিখ আপনি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কোনও জিনিস কিনলেন। কিন্তু মাসের শেষে তো আপনার হাত ফাঁকা। চিন্তার কোনও কারণ নেই। পরের মাসে বেতন পেলে কিংবা হাতে টাকা এলে নিশ্চিন্তে বিল জমা দিন। এতে আপনি সময়ে যেমন জিনিস কিনতেও পারলেন, তেমনই সঙ্গে সঙ্গে টাকা দেওয়ার প্রয়োজন না হওয়ায় আপনার অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থের ইন্টারেস্ট পেতেও অসুবিধা হল না।
২. অনেকেরই ধারণা অতিরিক্ত চার্জের হাত থেকে বাঁচতে ক্রেডিট কার্ডের ন্যূনতম বকেয়া অর্থ দিলেই কাজ মিটে যাবে। কিন্তু বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। এতে কেবলমাত্র লেট ফি থেকেই মুক্ত হন আপনি। তাই যদি নির্ধারিত দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ বকেয়া মিটিয়ে দিতে পারেন, তাহলে দুশ্চিন্তা থাকে না।
৩. ক্রেডিট কার্ড থেকে মোটা অংক খরচ করেছেন। অথচ তা একবারে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে ইএমআইয়ের মাধ্যমেও ইনস্টলমেন্টে টাকা জমা দিতে পারেন।
৪. অনেকেই ক্রেডিট কার্ডের ক্রেডিট লিমিট বাড়াতে ভয় পান। ক্রেডিট লিমিট বাড়লে খরচও বাড়বে, এই আশঙ্কাই মাথা ঘোরে অনেকের। কিন্তু বিষয়টা তেমন নয়। এটা আসলে আপনার আর্থিক উন্নতিই ঘটায়। কারণ জরুরি অবস্থায় টাকার প্রয়োজন হলে আর আপনার ক্রেডিট কার্ডের লিমিট বেশি থাকলে দিনের শেষে আপনিই লাভবান। সঠিক সময় বিল দিলে প্রয়োজনে লোন নিতেও সুবিধা হবে আপনার। বাড়বে ক্রেডিট স্কোরও।
৫. পুরনো অব্যবহৃত ক্রেডিট কার্ড বন্ধ করতে গেলে অল্প সময়ের জন্য আপনার ক্রেডিট স্কোর কমে যেতে পারে। তাই চেষ্টা করুন কার্ডটি বন্ধ করার আগে সেই ব্যাংককে বলে যাতে ক্রেডিট লিমিট বাড়িয়ে নেওয়া যায়। ক্রেডিট কার্ডকে জরুরি সময়ের বন্ধু মনে করলে সেটি আখেরে আপনার কাজেই আসবে।