গার্মেন্টেসের মালামাল চুরির ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রামের সদরঘাট থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ কাওছার হোসেন(৩০), মোঃ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে সাদ্দাম(২৬), শাহাদাৎ হোসেন(২৯) ও আনোয়ার হোসেন(২৯) । যারা অভিনব পন্থায় গার্মেন্টেসের মালামাল চুরি করতো। এই ঘটনায় আরো একজন পলাতক রয়েছে। যাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে থানা পুলিশ।
চট্টগ্রামের জনসংযোগ শাখা হতে জানানো হয়, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২.১৪ টায় সদরঘাট থানার ১১৬ স্ট্যান্ড রোডস্থ বাংলা বাজার আদিলা এ্যাপারেলস্ গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনকৃত ৬,৭২০ পিচ জ্যাকেট ২২৪ কার্টুনের ভিতরে করে সীতাকুন্ড থানার ভানুর বাজার নামক স্থানে পোর্টলিংক ডিপোতে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল কাভার্ডভ্যানের ড্রাইভার।
যে ড্রাইভার কাভার্ডভ্যানটি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল সে এবং গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজশে ও কৌশলে উক্ত গাড়ীর ভিতরে থাকা ২২৪ কার্টুন হতে কৌশলে ২৭৩৪ পিচ জ্যাকেট যাহার মূল্য অনুমান ১০,০০,০০০ টাকা চুরি করে নিয়ে কার্টুনে পূনরায় পূর্বের মত অবিকল সিল ও অর্ডার নং লিখিয়া সীতাকুন্ড থানার পোর্টলিংক ডিপোতে বুঝিয়ে দেয়।
পরবর্তী সময়ে শিপিং এজেন্ট গ্লোবাল জাপানের ইন্ডিপ কোম্পানীকে বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে উক্ত দেশের ক্যানভেরা এজেন্টকে বুঝিয়ে দেয়। এরপর জাপানের ইন্ডিপ কোম্পানী অর্ডার নং-৯৩০১৪৪-২ হতে ৩২৪ কার্টুন খুলে ৩৯৮৬ পিচ জ্যাকেট বুঝিয়ে পায়। অবশিষ্ট ২৭৩৬ পিচ জ্যাকেট কম এবং কার্টুনের ভিতর হতে ১টি কালো রংয়ের ওয়ালটন মোবাইল সেট, যাহার মডেল নং-এল-৬ পায়। বিষয়টি জাপানের ইন্ডিপ কোম্পানীর প্রতিনিধি বাদীর প্রতিষ্ঠানে ই-মেইলের মাধ্যমে অবহিত করে। যার ফলশ্রæতিতে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কমার্শিয়াল অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১১ নভেম্বর, ২০১৮ সদরঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
থানা পুলিশ মামলার তদন্তে নেমে মামলার ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকাসহ হাটহাজারী থানার ফতেয়াবাদ এলাকায় রাতভর রুদ্ধশ্বাস অভিযান পরিচালনা করে মামলা রুজু হওয়ার ১২ ঘন্টার মধ্যে ঘটনার সহিত জড়িত ওই চারজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, গার্মেন্টসের তৈরি পোষাক বিদেশে রপ্তানীর জন্য গোডাউন হতে ট্রান্সপোর্টে কাভার্ডভ্যানে লোড হওয়ার পর চোর চক্রের সদস্যের দলনেতার সহিত কাভার্ডভ্যানের ড্রাইভারের পূর্ব হতে পরিচিতি থাকায় তারা ৫০% কন্টাক করে নেয়। চোরেরা তাদের নির্দিষ্ট ডিপোতে গার্মেন্টস এর লোডকৃত কভার্ডভ্যান নিয়া যায়। ডিপো গুলো বহুতল বিল্ডিংয়ের নিচে অবস্থিত।
এই চোর চক্রের সদস্যদের চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত একাধিক ডিপো রয়েছে। যাতে গার্মেন্টস এর পোষাক ভর্তি কাভার্ডভ্যান চোরেরা তাদের নির্দিষ্ট ডিপোতে প্রবেশ করে বাহির হতে শার্টার নামিয়ে দেয়। তারা কাভার্ডভ্যানের সীলগালা অক্ষত রেখে যেখানে সীলগালা থাকে, সেখানে নট খুলে তৈরি পোষাকের কার্টুনের কসটেপ ব্লেড দিয়ে কেটে কার্টুনের ভিতর হতে ৪/৫ পিচ কাপড় নিয়ে পূনরায় কসটেপ মেরে কাভার্ডভ্যানের নট লাগিয়ে দেয়। এতে সীলগুলো অক্ষত থাকে। এইভাবে তারা দীর্ঘদিন ধরে চুরি করে আসছে বলে স্বীকার করে।