ডিএমপি নিউজঃ নাম তার সুবর্ণা আক্তার। থাকেন রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে, পেশা গৃহকর্মী হয়ে মহানগরীর বিত্তবানদের বাসায় কাজ করা। কিন্তু এই সহজ-সুন্দর পরিচয়ের বাইরে প্রকৃতপক্ষে সে এক পরিকল্পিত চোরচক্রের সদস্য। বিভিন্ন বাসায় কাজ নিয়ে কিছুদিন পর সুযোগ বুঝে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়াই যার লক্ষ্য।
এভাবে সম্প্রতি সে বনানী এলাকায় কাজ নেয় শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রফেসরের বাসায়। আর ওই বাসা থেকে কিছুদিন পর খোয়া যায় মূল্যবান স্বর্ণালংকার। তবে এই ঘটনা গত কয়েক মাস আগে ঘটলেও প্রকাশ্যে আসে সম্প্রতি।
এ ঘটনায় বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি বনানী থানায় একটি চুরি মামলা হয়। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবি গুলশান বিভাগকে। তদন্তে চুরির ঘটণায় জড়িত থাকার প্রেক্ষিতে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ ওই গৃহকর্মী সুবর্ণা আক্তারসহ তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত সহযোগীর নাম রবিন।
তাদেরকে রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২) রাজধানীর বনানী কড়াইল বস্তি ও শাহজাদপুর থেকে গ্রেফতার করে ডিবি গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম। তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে চুরি হওয়া কিছু স্বর্ণালংকার।
শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরকে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণালংকার আজ বুঝিয়ে দেন ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম(বার)।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এসএম রেজাউল হক ডিএমপি নিউজকে জানান, গত ২৯/১০/২০২১ থেকে ০৪/০১/২০২২ তারিখের মধ্যে যেকোন সময় বনানীর একটি বাসা থেকে স্বর্ণের চুড়ি, লকেটসহ বেশ কিছু স্বর্ণালংকার চুরি হয়।
আসামী গ্রেফতার ও চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার সম্পর্কে তিনি বলেন, মামলাটির দায়িত্ব পাওয়ার পর গোয়েন্দা তথ্য ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রথমে কড়াইল বস্তিতে একজনের সন্ধান নিশ্চিত হওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি বেলা ০৪:০০ টায় কড়াইল বস্তির ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় সুবর্ণা নামের গৃহকর্মীকে। এ সময় তার হেফাজত থেকে ১ ভরি ৭ আনা ৫ রতির একটি স্বর্ণালংকার ও ১০ হাজার টাকা উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।
তার দেয়া তথ্যমতে ওইদিন বেলা ০৫:৩০ টায় শাহজাদপুরের একতা জুয়েলার্সের রবিনকে গ্রেফতার করা হয়। আর তার হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয় ৮ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও ১০ হাজার টাকা, যোগ করেন ডিবি কর্মকর্তা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে গোয়েন্দা এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য। গ্রেফতারকৃত সুবর্ণা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিত্তবানদের বাসায় কাজের বুয়া সেজে কাজ করতে যায়। কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে স্বর্ণালংকার, টাকা ও মূল্যবান সম্পদের প্রতি দৃষ্টি রাখে। পরবর্তীতে কিছু দিন কাজ করার পর সুযোগ বুঝে বাড়ির মালিকের অগোচরে বাসার স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সম্পদ চুরি করে পালিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে চোরাই এসব স্বর্ণালংকার গ্রেফতারকৃত রবিনের নিকট বিক্রয় করে থাকে।
আরো পড়তে পারেন- কাজের বুয়া নিয়োগে কিছু বিশেষ সতর্কতা