ডিএমপি নিউজঃ মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত রয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের গৌরবময় ১১ সেক্টরের সাফল্যগাঁথা। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের ১১ সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রয়েছে অকল্পনীয় বীরত্বের স্বাক্ষর। ইতিহাস পড়ে ও শুনে আমাদের নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে জেনেছে। অনেকে জেনেছে খুব ভালো করে আবার কেউ কেউ জেনেছে আভা আভা। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ফলে আমরা পেয়েছি আমাদের প্রিয় জন্মভূমি এই সুন্দর সূফলা বাংলাদেশকে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সমগ্র বাংলাদেশকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ১১টি পৃথক পৃথক সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছিল। অনেকের কাছে এটা জানা কথা। ১১ টি সেক্টর ছিল কিন্তু অনেকে জানেন না কোন কোন জেলা নিয়ে কার নেতৃত্বে এই সেক্টর গুলো পরিচালিত হয়েছিল। তাই আজকের আয়োজনে এই স্বাধীনতার মাসে ডিএমপি নিউজ পাঠকদের সামনে তুলে ধরছে স্মৃতিবিজড়িত গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের ১১ সেক্টর।
সেক্টর ১-
ফেনী নদী থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও ফেনী পর্যন্ত ছিল ‘সেক্টর ১’। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান এবং জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর রফিকুল ইসলাম।
সেক্টর ২-
নোয়াখালী, ঢাকা, ফরিদপুরের কিছু অংশ ও কুমিল্লা নিয়ে গঠিত হয়েছিল ‘সেক্টর ২’। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর খালেদ মোশাররফ ও সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর হায়দার।
সেক্টর ৩-
হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকার কিছু অংশ ও কুমিল্লা ছিল ‘সেক্টর ৩’ এর আওতায়। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর শফিউল্লাহ। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন মেজর নুরুল্লাহ।
সেক্টর ৪-
সিলেট জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত হয়েছিল ‘সেক্টর ৪’। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর সি এর দত্ত।
সেক্টর ৫-
বৃহত্তর ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং সিলেট জেলার অংশ বিশেষ নিয়ে সেক্টর ৫ গঠিত হয় । মেজর মীর শওকত আলী ছিলেন সেক্টর কমান্ডার।
সেক্টর ৬-
দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও মহাকুমা ও রংপুর নিয়ে গঠিত হয় ‘সেক্টর ৬’। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ইউং কমান্ডার বাশার।
সেক্টর ৭-
রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, দিনাজপুরের দক্ষিণ অঞ্চল ও রংপুরের কিছু অংশ ছিল ‘সেক্টর ৭’ এর অন্তর্ভুক্ত। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর কাজী নুরুজ্জামান।
সেক্টর ৮–
খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরের কিছু অংশ ছিল ‘সেক্টর ৮’ এর অন্তর্ভুক্ত। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী ও আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এম এ মঞ্জুর।
সেক্টর ৯-
পটুয়াখালী, বরিশাল ও খুলনার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয় ‘সেক্টর ৯’। ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর এম এ জলিল ও তারপর মেজর জয়নাল আবেদীন।
সেক্টর ১০-
সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল, নৌ কমান্ডো ও আভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন ছিল ‘সেক্টর ১০’এর অধিনে। এ সেক্টরে নৌ কমান্ডোরা যখন যে সেক্টরে মিশনে নিয়োজিত থাকতেন, তখন সে সেক্টরের কমান্ডারের নির্দেশে কাজ করতেন।
সেক্টর ১১-
কিশোরগঞ্জ বাদে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা নিয়ে গঠিত হয় ‘সেক্টর ১১’। এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু তাহের ও তারপর ফ্লাইট লেফট্যান্যান্ট এম হামিদুল্লাহ।