পেটের কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন না, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। খাবারে একটু এদিক-সেদিক হলেই পেটের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। পেটে গ্যাস হওয়া তারই একটি উদাহরণ।
গ্যাস থেকে সৃষ্ট পেট ব্যথা অতি পরিচিত একটি সমস্যা। খাবারের অনিয়ম বা জীবনযাপন পদ্ধতি পরিবর্তনের কারণে অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন। অনেক সময় এমন ব্যথা মারাত্মক আকার ধারণ করে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
গ্যাসের ব্যথা কমাতে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-
ব্যায়াম: গ্যাসের ব্যথা কমাতে কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম করলে গ্যাসের ব্যথা কিছুটা হলেও নিরাময় হয়। এজন্য মেঝেতে উপুর হয়ে বসে পা দুটি সাইকেল চালানোর মতো রেখে হাত দুটি পাশে রাখুন। বড় করে নিঃশ্বাস নিন। ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এতে গ্যাস থেকে মুক্তি পাবেন। খাওয়ার পরে কিছুটা হাঁটলেও গ্যাসের সমস্যা কমে। এছাড়া গ্যাসের সমস্যা কমাতে নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে পারেন।
পুদিনা পাতা: গবেষণায় দেখা গেছে, পুদিনা পাতার তেল ডায়রিয়া, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভূমিকা রাখে। পুদিনা পাতায় থাকা অ্যান্টিপেসমোডিক গুণাগুণ পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত গ্যাসের ব্যথায় ভোগেন তারা খাওয়ার আধঘন্টা আগে পুদিনা পাতার ক্যাপসুল খেতে পারেন। গ্যাসের ব্যথা নিরাময়ে এই পাতার রস, তেলও খেতে পারেন।
হিট প্যাড: কিছু গবেষণা বলছে, হিটিং প্যাড ব্যবহার করলে অতিরিক্ত গ্যাসের ফলে সৃষ্ট পেট ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত উত্তপ্ত একটি গরম প্যাড এক ঘন্টা পর্যন্ত পেটের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।
প্রতিদিন খাবারের আগে এবং পরে একটি সাধারণ পেটের ম্যাসাজও আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
কীভাবে করবেন:
– মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে তার উপর শুয়ে পড়ুন।
– নিশ্চিত করুন যে আপনি যখন এটি করছেন তখন আপনার হাঁটু বাঁকানো এবং পা সমতল অবস্থানে রয়েছে।
– এখন, আপনার উভয় হাত পেটের উপর রাখুন এবং একটি বৃত্তাকার উপায়ে ম্যাসাজ শুরু করুন। এটি ক্লকওয়াইজ এবং এন্টি- ক্লকওয়াইজ উভয়ই করুন।
– ম্যাসাজ চালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে শ্বাস নিন এবং শ্বাস ছাড়ুন।
– আপনি যে জায়গাগুলোতে ব্যথা অনুভব করছেন সেখানে সামান্য চাপ প্রয়োগ করতে পারেন। পেটে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না হওয়া অবধি ম্যাসাজ করতে থাকুন।
– পানি পানের পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন। নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করছেন, প্রতিদিন অন্তত ছয় গ্লাস পানি পান করুন। এটি প্রসারণ এবং হজম সম্পর্কিত সমস্যাগুলো দূরে রাখে।
ঘরোয়া এসব পদ্ধতি অনুসরণ করার পরও পেট ব্যথা না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।