বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডের উত্তরাংশের বন্যা কবলিত এলাকাগুলো থেকে ট্রাক্টর ও নৌকায় করে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছে উদ্ধারকারীরা।
ডেবির প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি দেশটির ওপর দিয়ে প্রবল ঝড়ও বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়ার এ ধরনের আচরণ ৫০০ বছরে একবার হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আবহাওয়াবিদরা।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে শক্তির দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি চার মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ডেবি অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলের কুইন্সল্যান্ডে আঘাত হেনেছিল।
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ উপকূলের পর্যটন রিসোর্টগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় শহরগুলোর বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে ব্যাপক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
তারপর থেকে দুর্বল হয়ে ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হওয়া ডেবির শেষাংশটি নিউজিল্যান্ডে হাজির হলেও অস্ট্রেলিয়ায় এখনও এর প্রভাব রয়ে গেছে।
ডেবির প্রভাবে কুইন্সল্যান্ডে ভারি বৃষ্টিপাতের পর বন্যা দেখা দিয়েছে। বাড়তে থাকা নদীর পানিতে দেখা দেওয়া বন্যায় বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে কুইন্সল্যান্ডের রকহ্যাম্পটন শহর পুরোপুরি ডুবে গেছে। বন্যার কারণে কুইন্সল্যান্ডের কয়লা খনিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ডেবির প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টিপাতে নিউজিল্যান্ডের অনেক মহাসড়ক ভূমিধসে বন্ধ হয়ে গেছে; ৫ এপ্রিল, ২০১৭। রয়টার্স
ডেবির প্রভাবে নিউজিল্যান্ডের নর্থ আইল্যান্ডে টানা দুদিন ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে বেশ কয়েকটি ভূমিধসের ঘটনায় দেশটির অনেকগুলো মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে।
এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডে কারো নিহত হওয়ার খবর পাওয়া না গেলেও বাড়তে থাকা নদীর পানিতে একজন তলিয়ে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তাকে উদ্ধারে কর্তৃপক্ষ সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বন্যায় তলিয়ে যাওয়া প্লেন্টি উপসাগরের তীরবর্তী শহর এডজেকুম্বে থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
রাজধানী ওয়েলিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিউজিল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী পলা বেনেট বলেছেন, “জীবনহানির ঝুঁকি এখনও আছে। জনগণের জন্য এখন পরিষ্কার বার্তা হচ্ছে: চলে যান এবং (শহরের) বাইরেই অবস্থান করুন।”
গত নভেম্বরের সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্পের ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই দেশটি ফের দুর্যোগের মধ্যে পড়েছে। ভূমিকম্পের সময়ও ভূমিধসে দেশটির অনেক মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেগুলোর কোনো কোনোটি চালুর পর ফের ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।
ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র কাইকৌরা শহরের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগের প্রধান মহাসড়কটি ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেটি চালুর করার কয়েক ঘন্টা পর বৃষ্টির প্রভাবে ফের ভূমিধসের ঘটনায় সড়টি আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে কাইকৌরা আবারও সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।