৩ জানুয়ারি চাঁদের উল্টো পিঠে দক্ষিণ মেরুর এইটকেন অববাহিকায় অবতরণ করে চীনের রোবটিক নভোযান চ্যাং’ই ৪। পৃথিবী থেকে লুকিয়ে রাখা চাঁদের অচিনপাশ থেকে নিজেদের ছবি তুলে পাঠিয়েছে চীনের নভোযান চ্যাং’ই ৪। অবতরক (ল্যান্ডার) যান এবং গবেষণারত রোবট (রোভার) একে অপরের যেসব ছবি তুলেছে, সেসব ছবি প্রকাশ করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি।
৩৬০ ডিগ্রির একটি প্যানোরমিক ছবিও হাতে পেয়েছেন বেইজিংয়ে নিয়ন্ত্রণকক্ষে থাকা অভিযানের বিজ্ঞানীরা। তারা এসব ছবিকে ‘রোমাঞ্চকর’ এবং এ ঘটনাকে ‘মহাসাফল্য’ বলে অভিহিত করেছেন। ছবিগুলোয় দেখা যায়, অবতরক ও রোবটটি যেখানে রয়েছে, সেখানে বেশ কিছু গিরিখাত আছে। এসব গিরিখাতের পৃষ্ঠতল পাথুরে কিন্তু অমসৃণ। ফলে রোবটটিকে নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কষ্টসাধ্যই হবে।
সিএনএসের উপপরিচালক এবং এ অভিযানের প্রধান কমান্ডার চুনলাই লি বলেছেন, প্যানোরমিক ছবিটি আসলে আশিটি ছবির সমন্বয়। অবতরকের একটি ক্যামেরা থেকে এসব তোলা হয়েছিল একই সঙ্গে। লি বলেন, ‘প্যানোরমিক ছবিতে আমরা অনেক ছোটখাটো গিরিখাত দেখতে পাচ্ছি। এটা সত্যিই রোমাঞ্চকর।’ তিনি বলেন, ‘এটাই এই অভিযানের একটা মহাসাফল্য।’চীনের মহাকাশ সংস্থাটি ১২ মিনিটের একটি ভিডিওচিত্রও প্রকাশ করেছে। চ্যাং’ই ৪ অবতরকের ক্যামেরায় তোলা চার হাজার সাতশ ছবির সমাহার ওই ভিডিওচিত্র।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে চীনা বংশোদ্ভূত মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইয়ে কুয়ানচি এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘সত্যি বলতে কী, এ এক মহাতাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত। বিশেষ করে, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে। চাঁদের উল্টো পাশে নভোযান অবতরণ মানব ইতিহাসে এই প্রথম। আর চীনের জন্য এ এক অন্যরকম অর্জন, এমন কিছু তারা করে দেখাল, যা আগে কখনো কোনো জাতি ভাবতেও পারেনি।’
চীনের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা সিএনএসএ মনুষ্যবিহীন এই চন্দ্রাভিযান পরিচালনা করছে। ৭ ডিসেম্বর চন্দ্রযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়। অনুসন্ধানী রোবটটির নাম জেড র্যাবিট ২। এটি দেড় মিটার লম্বা; প্রস্থ ও উচ্চতায় এক মিটার।