চিতাবাঘের এই অদ্ভুত আচরণ গত কয়েক দশকে অনুসন্ধানী করে তুলেছিল প্রাণী গবেষকদের। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে ‘প্যান্থারিয়া’ নামক একটি প্রাণী গবেষণা সংগঠন চিতাবাঘের এই অদ্ভুত আচরণের কারণ উদঘাটন করেছে।
উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার সমভূমি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার স্যাবি স্যান্ড গেম রিজার্ভ সাফারি পার্কের চিতাবাঘদের ওপর ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যবর্তী সময়ে পরিচালিত এই অনুসন্ধানে দেখা যায় শিকারের পর একটি পুরুষ চিতা ৩০০ কেজি ওজনের একটি জিরাফকেও অনায়াসে গাছের ১০ মিটার উপরে ( ১ মিটার=৩.২৮ ফুট) উঠিয়ে নিয়ে যায়। অথচ একটি তিনশ কেজি জিরাফের ওজন একটি চিতার চেয়ে কমপক্ষে পাঁচ গুণ বেশি।
অনুসন্ধানে দেখা যায় চিতারা যদি শিকার করার পর তা টেনে গাছের উপর না উঠায় তাহলে তা তাদের খাবারে সিংহ ও হায়েনা ভাগ বসায়। কারণ চিতা ক্ষিপ্র গতির জন্য যতটা বিখ্যাত অন্য শিকারি প্রাণীর সাথে লড়াইয়ে ততটা নয়। বরং শিকার নিয়ে অন্য প্রাণীর সাথে লড়াইয়ের পরিবর্তে চিতা পালিয়ে যায়। ফলে তারা সিংহ ও হায়েনার সাথে শিকার নিয়ে অনাকাঙ্খিত লড়াই থেকে বাঁচার জন্য মৃত শিকার নিয়ে গাছে উঠে।
অনুসন্ধানী দলের প্রধান গুই বাম বলেন, ‘স্যাবি স্যান্ড গেম রিজার্ভ সাফারি পার্কের একশত চারটি বাঘের ওপর দুই বছরের অনুসন্ধানে দেখা যায় চিতারা এই সময়ের মধ্যে প্রায় চল্লিশ ধরনের প্রাণী শিকার করেছে। শিকারের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার দুইশত পনেরটি। এর অর্ধেক তারা টেনে গাছে উপর তুলেছে। যার ৬৭ শতাংশই তারা খেতে পেরেছে। আর বাকি যে অর্ধেক তারা শিকারের পর টেনে গাছের উপর তোলেনি তার পুরোটাই সিংহ ও হায়েনার কাছে হারিয়েছে।’
তবে শুধুমাত্র সিংহ বা হায়েনা নয় চিতাবাঘের শিকারে ভাগ বসায় অন্য চিতাও। এক্ষেত্রে অন্য একটি চিতার শিকার ছিনিয়ে নিতে পুরুষ চিতা খুবই পারদর্শী। ফলে একটি চিতাবাঘ শুধুমাত্র তার কষ্টের শিকারকে বাঁচানোর জন্য অধিকাংশ সময়ই তার ওজনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ওজনের শিকার গাছে টেনে তুলতে দ্বিধা করেনা।