রেল-সড়ক বিচ্ছিন্ন আগেই হয়েছে৷ এবার চীনের সঙ্গে অভ্যন্তরীণ আকাশপথ রুদ্ধ করল হংকং প্রশাসন৷ এর জেরে দুই অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন৷ হংকংবাসী আগেই জানিয়েছিলেন, কোনও অবস্থাতেই এই সময়ে চীনের সঙ্গে যাতায়াত খোলা রাখা যাবে না৷ সর্বশেষ পরিসংখ্যান চীনে শতাধিক মানুষ করোনা ভাইরাসে মৃত৷ দু হাজারের বেশি আক্রান্ত৷
আধা স্বায়ত্তশাসিত শহর হংকংয়ে ৮ জন ও চীনের আরেকটি বিশেষ প্রশাসনিক শহর ম্যাকাওতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৫ জন বলে একাধিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট৷ ফলে চরম আতঙ্কিত হংকংবাসী৷
হংকংয়ের প্রধান প্রশাসক ক্যারি ল্যাম মঙ্গলবার বলেন, সাময়িক সময়ের জন্য এমন যোগাযোগ বন্ধ করা হচ্ছে। চীনে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে আকাশ ও সীমান্তপথে সব ধরনের যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ করা হল৷ হংকংয়ের মেডিকেল ইউনিয়নের তীব্র চাপ আসার পরে এই সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় সরকার৷ এর আগে তারা হুমকি দিয়েছিল সীমান্ত বন্ধ না হলে অবরোধ ডাকা হবে।
এদিকে অবরোধ ইস্যু ফের মাথাচাড়া দিতেই চীন্তিত হয়ে পড়ে হংকং প্রশাসন৷ এর আগেও চীনা আইন চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতায় উত্তাল হয়েছে এই স্বশাসিত অঞ্চলটি৷ চীন ও হংকং দুই অঞ্চলের মধ্যে বিরোধিতা তুঙ্গে৷ কারণ, হংকংবাসীর দাবি চীন সরকার তাদের কঠোর দমন নীতি স্বশাসিত এলাকা হংকংয়ে চাপিয়ে দিতে চায়৷
এই আইনের বলা হয়, কেউ যদি চীন থেকে অপরাধ করে হংকংয়ে ঢুকে পড়ে তাকে গ্রেফতার করা হবে৷ আর হংকংবাসীর দাবি, এই গ্রেফতারির অছিলায় স্থানীয় চীন বিরোধীদের উপর অত্যাচার করতে চাইছে জিনপিং সরকার৷ বিক্ষোভের জেরে এমন অবস্থা হয় যে চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রবল সংঘর্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়৷ বন্ধ হয় বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হংকং বিমানবন্দর৷ চাপে পড়ে সেই দাবি মেনে নেয় স্থানীয় প্রশাসন৷
পরিস্থিতি ভয়াবহ তা আগেই জানিয়েছে চীন সরকার৷ প্রেসিডেন্ট জিনপিং বলেছেন, দেশজুড়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ কোনও অবস্থাতেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা এলাকায় আসা যাওয়া করা যাবে না৷ ফলে দেশটির হুবেই শহর অবরুদ্ধ৷ এখানেই করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি৷ হুবেই প্রদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই অঞ্চলে ১৩০০ মানুষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত৷ এদের মধ্যে ১২৫ জনের অবস্থা গুরুতর। রবিবার থেকে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ শতাংশ বেড়েছে।
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিভিন্ন দেশে ঢুকেছে৷ বিবিসি জানাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া-৫, কম্বোডিয়া-১, কানাডা-১, ফ্রান্স-৩, জার্মানি-১, জাপান-৪, মালয়েশিয়া-৪, নেপাল-১, সিঙ্গাপুর-৫, দক্ষিণ কোরিয়া-৪, শ্রীংলকা-১, থাইল্যান্ড-৮, তাইওয়ান-৪, যুক্তরাষ্ট্র-৫ ও ভিয়েতনামে ২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত৷