এক সঙ্গে দেশের ৩৪৯ জন শিক্ষার্থী চীন সরকারের স্কলারশীপ পেয়েছে। এসব শিক্ষার্থী চীনের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে। ডিগ্রি শেষে তারা চীনে উচ্চ শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগও পেতে পারেন। স্কলারশীপ পাওয়া কারিগরি শিক্ষাস্তরের ৩৪৯ জন শিক্ষার্থীর যাত্রাপূর্ব ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘ঢেলে সাজানো হচ্ছে দেশের কারিগরি শিক্ষার কারিকুলাম-সিলেবাস। সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায়ও কারিগরি শাখা সংযোজন করা হবে।’
শনিবার রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর আয়োজিত ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, আইডিইবি’র সভাপতি একেএমএ হামিদ প্রমূখ।
শিক্ষা মন্ত্রনালয় জানিয়েছে, চীন সরকারের ৩০ জন বিশেষজ্ঞ তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে বাছাই করে মোট ৩৪৯ জন শিক্ষার্থীকে স্কলারশীপ প্রদান করেছে। এরমধ্যে ৩১৮ ছাত্র এবং ৩১ জন ছাত্রী। এসব শিক্ষার্থী চীনের ১০টি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। পরবর্তীতে চীনে তারা উচ্চতর ডিগ্রিতে পড়ালেখা ছাড়াও কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে পারে। শিক্ষার্থীদের সবাই দেশের সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
৩৪৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে জিয়াংসু এগ্রি-এ্যানিম্যাল হাজব্যান্ড্রি ভোকেশনাল কলেজে ৮৭, নানজিং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ৭১, ইয়াংঝউ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ৬৬, হেইবেই কলেজ অব ইন্ডাস্ট্রি এ্যান্ড টেকনোলজিতে ১৮, সিচুয়ান ভোকেশনাল কলেজ অব ইনফরমেশন টেকনোলজিতে ১২, নানজিং ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রি টেকনোলজিতে ১৭, চ্যাংঝউ ইনস্টিটিউট অব মেকাট্রনিক্স টেকনোলজিতে ২৬, চ্যাংঝউ ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ১৮, জিয়াংসু মেরিটাইম ইনস্টিটিউটে ২২, চ্যাংদে ভোকেশনাল টেকনিক্যাল কলেজে ১২ জন পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিশ্বের চীন, জাপান, জার্মান অস্ট্রেলিয়া, কোরিয়া, সিংগাপুরসহ প্রতিটি উন্নত দেশের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে তাদের প্রত্যেকের কারিগরি শিক্ষার্থীর এনরোলমেন্ট হার ৬০ শতাংশের অধিক। আমাদের কারিগরি শিক্ষা অনেক পিছিয়ে ছিল। ২০০৯ সালের আগে কারিগরি শিক্ষার এনরোলমেন্ট ছিল ১ শতাংশের নিচে। সরকারের নানামুখী উদ্যোগ ও কার্যক্রমের ফলে বর্তমানে তা ১৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সরকার আগামী ২০২০ সালের মধ্যে এ হার ২০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে।’
কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে নতুন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নতুন ২৩টি জেলায় একটি করে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন, প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজ স্থাপন করা হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে ৪২০ জন এবং পরে আরো এক হাজার ১৫০ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। চীনের গুয়াংজুতে ৫৮১ জন শিক্ষকের পর্যায়ক্রমিক প্রশিক্ষণ চলছে।