ডিএমপি নিউজঃ আজ মঙ্গলবার (২১ জুন ২০২২) বিকালে গণভবন থেকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স ও দেশের অন্যান্য পুলিশ ইউনিটে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে পদ্মা সেতু (উত্তর) থানা ও পদ্মা সেতু (দক্ষিণ) থানাসহ গৃহহীনদের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মিত ১২০টি গৃহ হস্তান্তর, পুলিশ হাসপাতালের আধুনিকায়ন প্রকল্পের আওতায় ১২টি পুলিশ হাসপাতাল, বাংলাদেশ পুলিশের ৬টি নারী ব্যারাক এবং অনলাইন জিডি কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
উক্ত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) বলেন, “জনগণের সেবা প্রাপ্তি সহজতর করার লক্ষ্যে আমরা অনলাইনে জিডি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। ফলে ঘরে বসে সম্মানিত নাগরিকগণ অনলাইনে জিডি করতে পারবেন। অনলাইন জিডি কার্যক্রমের মাধ্যমে জনসাধারণকে প্রদত্ত সেবা বাংলাদেশ পুলিশকে জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।”
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহসী সিদ্ধান্ত ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতুর নিরাপত্তাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ সকল আইনগত সেবা প্রদানের জন্য মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতু (উত্তর) থানা এবং শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু (দক্ষিণ) থানা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে সংযোজন করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন সূচিত হবে। এ পরিবর্তনের অবিচ্ছেদ্য অংশীদার হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ দেশ ও মানুষের জন্য নিরলস কাজ করে যাবে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের মাননীয় উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উৎসাহ ও সমর্থনে বাংলাদেশ পুলিশের সেবা প্রদানে প্রযুক্তি নির্ভর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানাবিধ যুগপোযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রদানসহ জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এবং পুলিশের জনপ্রিয় বিভিন্ন অ্যাপস জনসাধারনের নিকট ব্যাপকভাবে সমাধৃত হয়েছে।
পুলিশ প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ প্রত্যয় বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় সারাদেশে ৫২০টি গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ৪০০ গৃহ ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১২০টি গৃহ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এ সকল বাড়ি পেয়ে গৃহহীন মানুষের জীবন-জীবিকায় দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটেছে।
পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা সুবিধার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত উদ্যোগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দিকনির্দেশনায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল করোনা অতিমারিকালে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ জনগণকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় ১২টি পুলিশ হাসপাতাল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ সদস্য ছাড়াও সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ জনগণকে এসব হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ৬৪টি জেলায় নারী পুলিশ সদস্যের জন্য পৃথক ব্যারাক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ২০২০ সালের মধ্যে ২২টি জেলায় নারী পুলিশ সদস্যদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ব্যারাক ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর আরও ছয়টি ইউনিটে ব্যারাক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
আইজিপি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর কাঙ্খিত জনগণের পুলিশ হয়ে উঠা ও স্বপ্নের সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে কাজ করে যেতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই পুলিশের সৃজনশীল মেধা ও শ্রম নিযুক্ত হবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে।
অনুষ্ঠানে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস প্রান্ত থেকে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আক্তার হোসেন, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি)সহ বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স, ময়মনসিংহ জেলা, পিরোজপুর পুলিশ লাইন্স, পদ্মা সেতু (উত্তর) থানা ও ১১টি পুলিশ হাসপাতাল প্রান্ত সরাসরি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিল। এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের সব থানা ও সব পুলিশ লাইন্স প্রান্ত ওয়ানওয়ে সংযুক্ত থেকে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেছে।
শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।