নগরীর প্রবেশ ও বাহির পথে জনদূর্ভোগ নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রা এবং ঘরফেরত মানুষের ভোগান্তিবিহীন নগরে ফেরা নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার দিকটিও বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন ও টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যেকোন ধরণের জনহয়রানি ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
নগরীর বিভিন্ন টার্মিনাল কেন্দ্রীক ডিএমপি’র গৃহীত ব্যবস্থা সমূহের মধ্যে থাকছে-
গাবতলী কেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনা :
গাবতলী বাস টার্মিনাল হতে বিভিন্ন জেলা অভিমুখে যানবাহন সমূহ বের হয়ে যাত্রী উঠানামার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়াতে পারছে। এক্ষেত্রে গাবতলী বাস টার্মিনাল কেন্দ্রিক মালিক শ্রমিক সমিতির সাথে সভা করে বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে এবং কোনক্রমেই টার্মিনাল গেইট থেকে যানবাহনসমূহ বের হয়ে রাস্তার উপর যত্রযত দাঁড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। কল্যাণপুর হতে আমিনবাজার পর্যন্ত সড়কে রোড ডিভাইডার/লাইনিং স্থাপন করে ঢাকা অভিমুখী ও ঢাকা হতে বহির্গামী যানবাহনসমূহ দ্রুত চলাচল করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে এই সড়কে অন্য কোন বাস/যানবাহন রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। গাবতলী/আমিনবাজারে স্থাপিত ইউলুপটি (ট-খড়ড়ঢ়) যানচলাচল উপযোগী রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে সমন্বয় সভা করে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টা গাবতলী কেন্দ্রিক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে ১ জন সিনিয়র অফিসার ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকে গাবতলী কেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা তদারকি করছেন। উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম) ও উপ-পুলিশ কমিশনার (মিরপুর) যৌথভাবে সমন্বয় করে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ এবং পিওএম/থানা/ফাঁড়ি থেকে অফিসার ও ফোর্স মোতায়েন করে যানজট নিরসনসহ যাত্রী সাধারনের ভোগান্তি ও হয়রানি বন্ধসহ আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। ঢাকা জেলার সাথে সমন্বয় করে আমিনবাজার ও গাবতলীর যানজট নিরসনে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশ সুপার, ঢাকা ও উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক পশ্চিম) যৌথভাবে কাজ করবেন।
আব্দুল্লাহপুর কেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনা :
অবৈধ ও এলোমেলো বাস ট্রাক পার্কিং বন্ধ করা হয়েছে। রুট পারমিটবিহীন কোন যানবাহনের স্ট্যান্ড থাকলে তা উচ্ছেদ করা হয়েছে। যাত্রী উঠা-নামানোর জন্য কোন গাড়ী রাস্তার উপরে যত্রতত্র থামতে পারছে না। ট্রাফিক বিভাগ ক্রাইম বিভাগের সহায়তার মাধ্যমে রাস্তায় অবস্থিত অবৈধ দখলকারী ও বাজার উচ্ছেদ করা হয়েছে। স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় ইউটার্ন অপ্রয়োজনীয় হলে সেটি বন্ধ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর হতে বহির্গামী ও ঢাকা অভিমুখী যানবাহনসমূহ যাতে সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে সে পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ সুপার, গাজীপুরের সাথে সমন্বয় করে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এয়ারপোর্ট থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত ডিএমপি উত্তরা বিভাগের সহায়তায় রাস্তা এবং ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত ও সচল রাখা হয়েছে।
সায়েদাবাদ কেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা :
সায়েদাবাদ হতে সাইনবোর্ড পর্যন্ত যানচলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। টার্মিনাল কেন্দ্রিক সমন্বয় সভা করা হয়েছে। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের গুলিস্তান পয়েন্টে প্রবেশপথে পরিস্কার রাখা হয়েছে যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে। এক্ষেত্রে অপরাধ বিভাগের সাথে সমন্বয় করে প্রবেশ মুখ ও বহির্মুখের পাশে যত্রতত্র অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে যান চলাচল সচল রাখা হয়েছে।
মহাখালী কেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা :
মহাখালী বাস টার্মিনাল হতে বিভিন্ন জেলা অভিমুখে যানবাহনসমূহ বের হয়ে যাত্রী উঠানামার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়াতে পারছে না। এক্ষেত্রে মহাখালী বাস টার্মিনাল কেন্দ্রিক মালিক শ্রমিক সমিতির সাথে সভা করে বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে এবং কোনক্রমেই টার্মিনাল গেইট থেকে যানবাহনসমূহ বের হয়ে রাস্তার উপর যত্রযত দাঁড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টা মহাখালী কেন্দ্রিক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে ১ জন সিনিয়র অফিসার ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকে গাবতলী কেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা তদারকি করছেন। উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) ও উপ-পুলিশ কমিশনার (গুলশান) যৌথভাবে সমন্বয় করে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ এবং পিওএম/থানা/ফাঁড়ি থেকে অফিসার ও ফোর্স মোতায়েন করে যানজট নিরসনসহ যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি ও হয়রানি বন্ধসহ আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
লঞ্চ টার্মিনাল, বাস স্ট্যান্ড, ট্রেন স্টেশন এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা :
প্রত্যেক ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারগণ তার অধিক্ষেত্রাধীন লঞ্চ টার্মিনাল, বাস স্ট্যান্ড ও ট্রেন স্টেশন (যদি থাকে)-এর নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে জনসাধারণের নির্বিঘœ যাতায়াত নিশ্চিতকল্পে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় সভার মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি তদারকি করছেন।
লঞ্চ টার্মিনালে কন্ট্রোল রুম স্থাপন :
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ২০১৭ উপলক্ষ্যে নৌ-পথের নিরাপত্তা, নির্বিঘেœ নৌযান চলাচল, যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা, সুবিধা-অসুবিধা পর্যবেক্ষণ ও মনিটর করার লক্ষ্যে সদরঘাট টার্মিনাল-এ বিভিন্ন সংস্থার নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তা/প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়। কন্ট্রোলরুম লঞ্চের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধ করা, যাত্রী উঠানোর পর লঞ্চের লোডিং লাইন পরীক্ষা করা, যাত্রী লোডিং করার পরপরই টার্মিনাল ত্যাগ করা, লঞ্চের ছাদে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করা, টার্মিনাল হতে বুড়িগঙ্গা ব্রিজ পর্যন্ত লঞ্চে নৌকাযোগে যাত্রী উঠা বন্ধ করা, পথিমধ্যে যাত্রী ওভার লোডিং হলে যাত্রী নামিয়ে দেয়া, যাত্রীদের উঠা-নামার সুবিধার্থে লঞ্চসমূহে চওড়া সিঁড়ির ব্যবস্থা, হ্যাচ বন্ধ করা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা, টিকিট কালোবাজারী, যাত্রী টানাটানি, কুলিদের মাল টানাটানি বন্ধ করা এবং অজ্ঞান/মলম পার্টির দৌরাত্ম্য সম্পর্কে যাত্রীদের সচেতনতা করার লক্ষ্যে মাইকিং করা সংক্রান্তে কার্যক্রম সার্বক্ষণিক তদারকীর মাধ্যমে নিশ্চিতকরণে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।