মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য তহবিল নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, দেশে অচলাবস্থা নিরসনে প্রশাসনের সঙ্গে কংগ্রেসের যে আলোচনা চলছে, তা ব্যর্থ হলে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র সরকার আংশিক অচল হয়ে রয়েছে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে। ট্রাম্পের দাবি, দেয়াল নির্মাণের অর্থ না দিলে বাজেটে তহবিল বরাদ্দ দেবেন না তিনি।
দেয়াল নির্মাণে তহবিলের জোগান দেওয়ার বিষয়ে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দপ্তরের (ডিএইচএস) সঙ্গে বেশ কিছুদিন থেকেই ডেমোক্রেটিক পার্টির আইন প্রণেতাদের আলোচনা চলছে। তবে এ ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়নি। ডিএইচএসের উপস্থাপন করা তথ্য নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন আইন প্রণেতারা। গতকাল তাঁদের আবারও আলোচনায় বসার কথা ছিল। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা অচলাবস্থা সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন এ অবস্থায় থাকতে পারি।’ এই কর্মকর্তা হোয়াইট হাউসের দুটি বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্প প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন ৫৬০ কোটি ডলারের বরাদ্দ দেওয়া না হলে তাঁর সামনে আসা যেকোনো পরিকল্পনা বাতিল করে দেবেন তিনি। এ কারণে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার মতো সিদ্ধান্তও নিতে পারেন তিনি। গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের দেশের নিরাপত্তার জন্য আমরা জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করতে পারি। আমি এখনো কাজটা করিনি। তবে হয়তো করব। জাতীয় জরুরি অবস্থা ডেকে এটা খুব দ্রুত বানিয়ে ফেলব।’
ট্রাম্পের হঠাৎই এতটা কঠোর অবস্থানে আসার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুরু করার সময় থেকেই এই দেয়াল নির্মাণের কথা বলে আসছেন। শুরুতে তিনি বলেন, এর নির্মাণ ব্যয় বহন করবে মেক্সিকো। তবে মেক্সিকো সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কোনো পয়সা দেবে না তারা। এরপর ট্রাম্প কংগ্রেসের কাছে ৫৫০ কোটি ডলার দাবি করেন। এতে কংগ্রেস রাজি না হলে সরকারের প্রয়োজনীয় তহবিল বরাদ্দে সই করতে অস্বীকৃতি জানান ট্রাম্প। তিনি এ অবস্থান নেওয়ায় গত ২২ ডিসেম্বর থেকে সরকারে আংশিক অচলাবস্থা দেখা দেয়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কংগ্রেসের বৈঠক চলছে। এতে সিনেটের সংখ্যালঘু দলের নেতা ডেমোক্র্যাট চাক শুমার এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি অংশ নেন। তাঁদের সঙ্গে কয়েক দফায় ট্রাম্পের পক্ষ থেকে অংশ নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। তাঁর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়কমন্ত্রী কির্স্টজেন নিয়েলসেনও ছিলেন। এ সময় নিয়েলসেনের উপস্থাপন করা বেশ কিছু পরিসংখ্যানের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেন ন্যান্সি। তিনি মনে করেন, নিয়েলসন সব অভিবাসীকেই সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সূত্র : সিএনএন, এএফপি।