মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানে পোশাক শিল্প ঘিরে কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশীদের। বর্তমানে দেশটির পোশাক শিল্পে কর্মরত প্রায় ২৪ হাজার বাংলাদেশী; যা দেশটির পোশাক শিল্পে কর্মরত মোট প্রবাসী শ্রমিকের ৪৯ শতাংশ।
জর্ডানের শিল্প খাতের কমপ্লায়েন্স পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) যৌথ উদ্যোগ ‘বেটারওয়ার্ক’। ‘অ্যানুয়াল রিপোর্ট ২০১৭: অ্যান ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স রিভিউ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জর্ডানের পোশাক শিল্পে মোট শ্রমিক সংখ্যা ৬৫ হাজারের বেশি। এর মধ্যে মাত্র ১৬ হাজার স্থানীয় শ্রমিক। বাকি ৪৯ হাজারই অভিবাসী শ্রমিক। ২৪ হাজারই বাংলাদেশী ছাড়াও শিল্পটিতে কর্মরত চীনের শ্রমিক রয়েছেন ১৮ শতাংশ। প্রায় সমসংখ্যক শ্রমিক ভারতীয়। এর বাইরে শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের ৬ শতাংশ করে শ্রমিক জর্ডানের পোশাক শিল্পে কর্মরত।
বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক পোশাক কারখানা থাকার পরও বাড়তি মজুরির কারণেই মূলত জর্ডানের পোশাক শিল্পকে বেছে নিচ্ছেন শ্রমিকরা। পাশাপাশি সামাজিক স্বীকৃতির বিষয়টিও কাজ করছে এর পেছনে।
বর্তমানে জর্ডানের মোট রফতানিতে পোশাক শিল্পের অবদান ১৯ শতাংশ। খাতটি থেকে জর্ডানের আয় হয় বছরে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬ সালে দেশটির পোশাক রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ শতাংশ। বর্তমানে দেশটিতে রফতানিমুখী পোশাক কারখানার সংখ্যা ৮১। এর মধ্যে ৩৫টি সরাসরি ও ৩০টি ঠিকা (সাব-কন্ট্রাক্ট) পদ্ধতিতে পরিচালিত। এছাড়া বাকি ১৬টি স্যাটেলাইট ইউনিট।
জর্ডানের পোশাক কারখানায় বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমের বিপরীতে ভালো অর্থ পাওয়ার নিশ্চয়তায় তারা দেশটিতে পাড়ি জমাচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে জর্ডানে বাংলাদেশী শ্রমিকদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। অন্য অনেকের তুলনায় রাষ্ট্র হিসেবেও জর্ডান ভালো। এছাড়া শ্রমিক অধিকার, দরকষাকষি ও শ্রমের মূল্য— সব দিক বিবেচনায় প্রাপ্তি ভালো হওয়ার কারণেই দেশটির প্রতি বাংলাদেশী পোশাক শ্রমিকদের আগ্রহ বাড়ছে।