আবারও জাপানের ওপর দিয়ে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক সূত্র জানায়, এই মিসাইলটি ৩ হাজার ৭০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে হোকাইড়ো সাগরে পতিত হয়। শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এটি জাপানের ওপর দিয়ে উত্তর কোরিয়ার দ্বিতীয় পারমাণবিক পরীক্ষা। এর আগেও তারা এমন কাজ করে এবং সেসময় সারাবিশ্বে সমালোচনার ঝড় উঠে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, তার দেশ এমন বিপজ্জনক কাজ ‘কখনও সহ্য’ করবে না। তিনি বলেন, যদি উত্তর কোরিয়া এমন করতেই থাকে তবে তাদের ভবিষ্যৎ ভালো নয়।
এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী রেক্স টিলারসনও। তিনি এই দোষ উত্তর কোরিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক মিত্র চীন ও রাশিয়ার উপর চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চীন উত্তর কোরিয়াকে তেল রফতানি করে আর রাশিয়া তাদের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মী নিয়োগ দেয় কোরিয়ার থেকে। চীন ও রাশিয়াকে অবশ্যেই এমন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিপক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে।
গত মাসে (আগস্ট) উত্তর কোরিয়া এমন একটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে যা দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানা যায়। পিয়ংইয়ং বহুবার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানার হুমকি দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ক্ষেপণাস্ত্র বহনযোগ্য একটি হাউড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করে পিয়ং ইয়ং। গত সপ্তাহের চালানো পরীক্ষাটি ছিল হাইড্রোজেন বোমার। ষষ্ঠ দফায় চালানো এই পরমাণু পরীক্ষার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব উত্থাপন করে। পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের সবাই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে রায় দেয়। মার্কিন প্রস্তাবে কয়লা, সীসা ও সামুদ্রিক খাদ্য রফতানিকে এবারের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
এর আগে জাপানের উত্তরাঞ্চলের একটি দ্বীপের উপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনাটি প্রশান্ত মহাসাগরে নিজেদের সামরিক অভিযানের প্রথম ধাপ হিসেবে উল্লেখ করেছে উত্তর কোরিয়া। সাগরে চলা যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়ার জবাব বলেও উল্লেখ করা হয়। গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকটি মিসাইল পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বারবার নিষেধ করে আসলেও শোনেনি তারা। সর্বশেষ জাতিসংঘ তাদের উপর দুই দফায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।