ডিএমপি নিউজঃ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে ‘ফেস অব দ্য বাংলাদেশ পুলিশ’ খ্যাত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। একে একে বাংলাদেশ পুলিশের আন্তঃ ইউনিট পর্যায়ের প্রায় প্রতিটি খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ‘টিম ডিএমপি’। অব্যাহত জয়ের ধারায় নিজেদের মাতিয়ে রেখেছে পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট ডিএমপি’র খেলোয়াড়রা। প্রায় প্রতিটি খেলায় ছিল পুরুষ ও নারী এ দুইটি ক্যাটাগরি। ডিএমপি’র পুরুষ খেলোয়াড়দের সাফল্যের পাশাপাশি নারী খেলোয়াড়রাও কোন দিক থেকে থেমে নেই। পুরুষদের সাথে সাথে তারাও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিভিন্ন খেলার ইভেন্টে।
সদ্য শেষ হলো বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ-২০১৭ প্রতিযোগিতা। টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হয় ডিএমপি ও সিলেট রেঞ্জ। সিলেট রেঞ্জকে ১-০ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় ডিএমপি।
তার আগের দিনই উত্তরা এপিবিএন মাঠে হলো বাংলাদেশ পুলিশ ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশীপ এর ফাইনাল।। ফাইনাল ম্যাচটিকে একপেশে বানিয়ে রাজশাহী রেঞ্জকে ৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় ডিএমপি টিম। টসে জিতে ডিএমপি দল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারের খেলায় ৮ উইকেটে ১৬৯ রান সংগ্রহ করে। রাজশাহী রেঞ্জ দল সব উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করতে পেরেছে মাত্র ৮৯ রান।
চলতি বছরে ডিএমপি এই পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের আন্তঃ ইউনিটের পুরুষ ও নারী ইভেন্টে বিভিন্ন খেলায় সর্বমোট ২৪ টি খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।হকি, ব্যাডমিন্টন (পুরুষ ও নারী), থ্রোবল(পুরুষ ও নারী), বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল (পুরুষ ও নারী), এ্যাথলেটিক্স ও সাইক্লিং, কুস্তি, বক্সিং, জুডো, কারাতে, টেনিস, বেসবল, সাঁতার, ক্রিকেট ও ফুটবলসহ প্রায় সবকটি ইভেন্টে ছিল ডিএমপি’র খেলোয়াড়দের একচ্ছত্র আধিপত্য।
টিম ডিএমপি’র সামনে রয়েছে কাবাডি ও ভলিবল চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল। আশা করা যায় ঐ সকল খেলাতেও ডিএমপি জয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে। এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডিএমপি’র ওয়েলফেয়ার ও ফোর্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার।
তিনি ডিএমপি নিউজকে জানান, বাংলাদেশ পুলিশ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ৩০ টি ইভেন্টে অংশ নিয়েছে ডিএমপি। এ প্রতিযোগিতায় প্রায় প্রত্যেকটি খেলায় ডিএমপি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য খেলাধুলার মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ডিএমপি তথা বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা। এই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে আমরা খেলোয়াড়দের উন্নত অনুশীলন করাচ্ছি। আমরা বাহির থেকে ভালো মানে কোচ এনে খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। এর ফলে বিগত বছরের চেয়ে আমাদের খেলোয়াড়দের খেলার মান আরো উন্নত হয়েছে। খেলোয়াড়দের উন্নত অনুশীলনের জন্য ডিএমপি কমিশনার মহোদয় সর্বাত্মক সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে খেলোয়াড়দের তৈরি করা হচ্ছে। আগামীতে যাতে করে প্রিমিয়ার লীগে পুলিশের টিম খেলতে পারে সেলক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে জাতীয় পর্যায়ের খেলার বিভিন্ন ক্লাবে আমাদের ডিএমপি’র খেলোয়াড়রা খেলছে। ডিএমপিতে বিভিন্ন খেলায় ৪০০ থেকে ৪৫০ জন খেলোয়াড় রয়েছে। এর মধ্যে ১০০ জন রয়েছে নারী খেলোয়াড়। জাতীয় পর্যায়ে হ্যান্ডবল ও থ্রো বলে বাংলাদেশ পুলিশ চ্যাম্পিয়ন। জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এ্যাথলেটিকস, বাস্কেটবল, জুডো, কারাতে খেলায় বাংলাদেশ পুলিশের অবদান রয়েছে।
কুস্তি, বক্সিং, জুডো, কারাতে প্রতিযোগিতায় ১৬০ টি পদকের মধ্যে ৬১ টি পদক অর্জন করে ডিএমপি । এর মধ্যে ৪৫ টি স্বর্ণ, ১৪ টি রৌপ্য ও ০২ তাম্র পদক জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় ডিএমপি।
গত ১২ ডিসেম্বর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে শহীদ এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক জুডো, কারাতে, শরীরগঠন প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ডিএমপি’র খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন- খেলাধুলায় বাংলাদেশ পুলিশের ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। দলগত ও এককভাবে ডিএমপি’র খেলোয়াড়রা বিভিন্ন ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আন্তঃ ইউনিট খেলায় শতকরা ৯৫ ভাগ খেলায় ডিএমপি বিজয়ী হয়েছে। তাদের এ কৃতিত্বের জন্য আন্তরিক সাধুবাদ জানাই।
কমিশনার আরো বলেন, মেয়েরাও খেলাধুলায় পিছিয়ে নেই। তারা ছেলেদের সাথে সমান তালে খেলাধুলায় এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সমর্থন সবসময় তোমাদের সাথে থাকবে। খেলাধুলার মাধ্যমে ডিএমপিকে আরো এগিয়ে নিতে হবে। তোমরা আরো ভালো করে প্রাকটিস করো যাতে করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য দেখাতে পারো।
এছাড়াও তিনি বলেন, আন্তঃ ইউনিট পর্যায়ের সমস্ত খেলা শেষ হলে ডিএমপি’র চ্যাম্পিয়ন দলদের এক বিশাল সংবর্ধনা দেয়া হবে। একটি জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমস্ত চ্যাম্পিয়ন দলকে একত্রিত করে পুরস্কৃত করা হবে।
ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম-বার, পিপিএম ডিএমপি’র প্রায় প্রতি খেলায় নিজে উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ জুগিয়েছেন। তিনি প্রতিনিয়ত খেলোয়াড়দের অনুশীলনস্থল পরিদর্শন করে তাদেরকে খেলায় বিশেষ মনোযোগী হতে উদ্বুদ্ধ করছেন। তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।