রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল মজিদ নীলফামারী জেলা সদরের সংগলশী ইউনিয়নের বড় সংগলশী কাচারি গ্রামের দিনমজুর মো. বাবলু ইসলামের ছেলে। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের তিলাই জয়চণ্ডী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একদল নারী-পুরুষ কৃষি শ্রমিক পাটক্ষেতে নিড়ানির কাজ করছে। ১৬ জনের এই শ্রমিক দলে আবদুল মজিদ একজন। মজিদের কাজের সঙ্গীরা জানান, প্রায় দুই বিঘা পাটক্ষেত নিড়ানি কাজের চুক্তি হয়েছে সাড়ে তিন হাজার টাকায়।
পরিবারের অর্থাভাবে মজিদের পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম। রাজশাহীতে মেস ভাড়া ও খাওয়া খরচের টাকা বাকি রেখে ছুটিতে বাড়ি এসেছেন। ওই টাকা পরিশোধ ও পরবর্তী কয়েক মাস চলার খরচ জোগাড়ে তিনি দিনমজুরি করছেন ছুটির সময়টাতে।
আবদুল মজিদ জানান, ২০১৪ সালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন বিজ্ঞান বিভাগে জেলা সদরের সোনারায় সংগলশী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি উত্তীর্ণ হন তিনি। ২০১৬ সালে সোনারায় সংগলশী ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৩.৯২ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন।
২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান তিনি। তখন তিনি তাঁর কলেজের রসায়ন বিভাগের শবনম নামের এক শিক্ষিকার আর্থিক সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বই কেনা, সেখানে থেকে লেখাপড়ার খরচ জোটানোর সংগ্রাম শুরু হয় তাঁর।
মজিদ বলেন, ‘২৭ মে থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি। বাড়ি আসার সময় মেসের দুই মাসের ভাড়া ও খাওয়া খরচ বাকি রেখেছি। ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে সে টাকা পরিশোধ করতে হবে আমাকে। এ ছাড়া পরবর্তী ছুটি না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকা-খাওয়ার খরচের টাকা জোগাড়ে কৃষি শ্রমিকের পেশায় নেমেছি আমি। ’