ডিএমপি নিউজঃ আপনার সন্তান কি টিভির প্রতি আসক্ত? এ আসক্তির জন্য আপনি দায়ি নয়তো? শিশুকে টিভিতে কার্টুন দেখতে দিয়ে অনেকেই বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন । আপনার আদরের সন্তানকে এখন যে বদ অভ্যাসটি আদর করে শেখাচ্ছেন, তা একদিন তার জন্য দারুন খারাপ অভ্যাসে পরিণত হবে।
পড়াশোনা আর এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকটিভিটির মধ্যে শিশুদের অবসর বা রিফ্রেশমেন্ট মানেই টেলিভিশন। সারাদিনের ধকলের পর শিশুর টিভি দেখার আবদার মানা করতেও কেমন যেন ঠেকে নিজের কাছেই। ফলে আনন্দ খুঁজতে টেলিভিশনের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে শিশুরা। কিন্তু গবেষণা বলছে টেলিভিশনের সামনে একটানা বসে থাকলে শিশুর বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি হয়।
টেলিভিশনে শিশুদের বেশিরভাগ অনুষ্ঠান হয় অ্যাকশন সম্পর্কিত। যা শিশুদের অ্যাগ্রেসিভ বা আক্রমনাত্মক করে তোলে। শিশুরা যা দেখে তাই শেখে এবং করে। বর্তমানে টেলিভিশনের পর্দায় বেশিরভাগ সময় হিংসা, হানাহানি ইত্যাদি দেখানো হয়। যার ফলে শিশুরা এগুলিকেই স্বাভাবিক বলে মনে করে। যে কারণে স্কুলে বা যে কোনও মানুষের সঙ্গে তারা এমন খারাপ ব্যবহার করে থাকে। যাকে আমরা না বুঝে তাদের বেয়াদবি ভেবে থাকি।
গবেষণার কারনে করা এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মোটামুটি ২৫ বছর পর্যন্ত মানুষ টেলিভিশন থেকে যা যা শেখে তা রপ্ত করে এবং তাই বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে।
তাই গবেষকদের মতে, শিশুর অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখা তাদের আচরণগত সমস্যা সৃষ্টি করে। কারণ তখন তারা টেলিভিশন থেকে দেখা অনুষ্ঠানের মতই আচরণ করে।
প্রিয় শিশুদের আরেকটি প্রধান সমস্যা হল, খেতে চায়না। খেলেও খাবারটা এনজয় করেনা। শর্ত হিসাবে জুড়ে দেয়, সামনে মোবাইল-ট্যাব বা টিভি জাতীয় কিছু দিতে হবে। আরেকটি সমস্যা হল শিশুর শারীরিক মুভমেন্ট। টিভি দেখার নেশায় শিশুটি খেলতে চায়না। দৌড়ঝাঁপ করেনা। এই না খাওয়া আর শারীরিক খেলাধুলার অভাবে শিশু মুটিয়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে দুর্বলস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব শিশু দিনে দু’ঘণ্টার বেশি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিয়ে মেতে থাকে তারা স্বাভাবিক লেখা পড়ায় মনযোগী হতে পারেনা। কোন কিছু বুঝতে বা স্কুলের পড়া মুখস্থ করাতে অভিবাবকদের অনেক যুদ্ধ করতে হয়।
তাই শিশুকে একটানা টেলিভিশন দেখতে দিবেন না। প্রয়োজনে সময় ভাগ করে একাধিকবার দেখতে দিন।
আজকের শিশু আগামী দিনের পরিণত মানুষ। অভিভাবক যদি এটা বিশ্বাস করেন তাহলে এখনই হতে হবে সতর্ক এবং অধিক দায়িত্বশীল। শিশুর সঠিক বিকাশ মানেতো একটি জাতির আলোকিত আগামীর সম্ভাবনা। তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।