ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮৫ লাখ টাকা ডাকাতির চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- সোহাগ মাঝি, মোঃ দেলোয়ার, মোঃ জয়নাল হোসেন, মোঃ সোহেল, মোঃ জনি ও মোঃ আজিজ । এসময় তাদের হেফাজত থেকে নগদ ২০ লাখ টাকা, ১ টি মাইক্রোবাস এবং ১ টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
আজ শনিবার (২৬ নভেম্বর ২০২২ খ্রি.) বেলা ১২ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।
গতকাল (শুক্রবার) ২৫ নভেম্বর ২০২২ ডিএমপির গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম এর নেতৃত্বে কোতয়ালী জোনাল টিম রাজধানীর দিয়াবাড়ী ও কাজলা এলাকা, ঢাকা জেলার সাভার থানা এবং পটুয়াখালী সদর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, গত ১৩ নভেম্বর ২০২২ দুপুর দেড়টায় কেরানীগঞ্জ থানার জনৈক ব্যবসায়ী তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যাগে করে নগদ ৮৫ লাখ টাকা নিয়ে পিকআপ যোগে আব্দুল্লাপুরস্থ সাউথ ইস্ট ব্যাংকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত ব্যবসায়ীর গতিরোধ করে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। এরপর ডাকাতরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মাইক্রোবাস এবং মোটর সাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। ডাকাতির ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র গোয়েন্দা-লালবাগ বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ডাকাত দেলোয়ার হোসেনকে রাজধানীর মিরপুর দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার তথ্যমতে সাভার থানার কাউন্দিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সরাসরি জড়িত অপর তিনজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের দেওয়া তথ্যমতে পটুয়াখালী সদর থানা এলাকা ডাকাত দলের সর্দার সোহাগ মাঝিকে ডাকাতির কাজে ভাগে প্রাপ্ত ১৯ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের তথ্যমতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীস্থ কাজলা এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, একটি মোটরসাইকেল এবং ডাকাতির কাজে ভাগে প্রাপ্ত ১ লাখ টাকাসহ আরো একজন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা ডাকাতির করার জন্য বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ডিবি/ পুলিশ পরিচয় প্রদান করে বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান করে। ব্যবসায়ীসহ আর্থিক লেনদেনকারীর গতিবিধি পর্যবেক্ষন করে। যেসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা নেই এরকম নিরিবিলি জায়গায় সুযোগ বুঝে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ভিকটিমদেরকে গতিরোধ করে। ভিকটিমদের নামে মামলা/ওয়ারেন্ট আছে বলে টাকার ব্যাগসহ গাড়িতে তুলে নেয়। ডাকাতরা তাদের সুবিধামতো জায়গায় টাকা/ মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে নির্জন এলাকা, রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ডাকাতির কাজে তারা হ্যান্ডকাপ, ওয়্যারলেস ও খেলনা পিস্তল ব্যবহার করত।
এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেনের সময় ব্যবসায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক কতৃপক্ষকে নিকটস্থ থানার অবহিত করার জন্য পুলিশের এই কর্মকর্তা পরামর্শ দেন।