ডিএমপি নিউজ: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়াকে সংবিধানসম্মত উল্লেখ করে পূর্ণাঙ্গ বিচার প্রক্রিয়া শুরুর অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন সেনেট। সেনেটে ৫৬-৪৪ ভোটে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবার পক্ষে রায় আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে গত ৬ই জানুয়ারির ভয়াবহ হামলার ঘটনায় সহিংসতায় উস্কানি দেবার অভিযোগ আনা হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) একটি ভিডিও প্রদর্শনের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয় এবং এ ভিডিওটি ছিলো মি. ট্রাম্পের ছয়ই জানুয়ারির বক্তৃতা এবং তার সমর্থকদের তাণ্ডবের দৃশ্য।
ম্যারিল্যান্ড থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি জ্যামি রাসকিন বলেন, “এটা বড় অপরাধ ও অসদাচরণ। এটা অভিশংসনযোগ্য অপরাধ না হলে আর কিছুই তা হতে পারেনা”।
সাবেক প্রেসিডেন্টের আইনজীবীরা যুক্তি দেখান যে সাবেক একজন প্রেসিডেন্টকে বিচারের মুখোমুখি করাটা অসাংবিধানিক এবং তারা এ জন্য ডেমোক্র্যাটদের উদ্যোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ তোলেন।
তবে ৫৬-৪৪ ভোটের অর্থ হলো অন্তত ছয় জন রিপাবলিকান সেনেটের ট্রাম্পের বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। যদিও এর পরেও এটি প্রমাণ করে যে সেনেটে শাস্তি এড়াতে মিস্টার ট্রাম্পের যথেষ্ট সমর্থন আছে। কারণ বিচার করে শাস্তি দিতে হলে সেনেটের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন দরকার হবে। তবে শাস্তি পেলে মিস্টার ট্রাম্প ভবিষ্যতে আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
মঙ্গলবার যা হলো:
সেনেট কার্যক্রমের শুরুতে ডেমোক্র্যাটরা যুক্তি দেখান যে তাদের উদ্যোগ আইনসম্মত। এরপর দশ মিনিটের ভিডিওটি দেখানো হয় যেখানে মি ট্রাম্প তার সমর্থকদের জীবন বাজি রেখে লড়াইয়ের কথা বলেন। এরপরই ক্যাপিটলে হামলার ঘটনা ঘটে। মিস্টার রাসকিন কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলেন, ক্যাপিটলে দাঙ্গার সময় সেখানে আসা তার কন্যার কাছ থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন এবং তিনি তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
“এটি আমেরিকার ভবিষ্যৎ হতে পারে না,” তিনি বলেন সেনেটরদের। এরপর মি. ট্রাম্পের আইনজীবীরা তাদের অবস্থান তুলে ধরেন। একজন আইনজীবী বলেন, “আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবার নির্বাচনে লড়াই থেকে বিরত রাখার জন্য সংবিধানের নামে এটি করা হচ্ছে”।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে, ফ্লোরিডায় বসে টেলিভিশনে সেনেটের কার্যক্রম দেখে আইনজীবীদের পারফরম্যান্স নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মি. ট্রাম্প।
এরপর কী ঘটবে: প্রতিটি পক্ষ এখন ১৬ ঘণ্টা করে সময় পাবে নিজেদের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে, যা শুরু হবে বুধবার দুপুরবেলা থেকে। এই যুক্তিতর্ক সপ্তাহান্ত পর্যন্ত চলবে বলে ধারণা। এরপর সেনেটররা দু পক্ষকেই জেরা করার সুযোগ পাবেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে বলে দিয়েছেন, তিনি অভিশংসন শুনানিতে যোগ দেবেন না এবং কোন বক্তব্যও দেবেন না।
দুপক্ষের আইনপ্রণেতারাই বলেছেন, তারা দ্রুত এই প্রক্রিয়া শেষ করার পক্ষে। সব মিলে যে ধরণের সময়সূচী দেখা যাচ্ছে, ধারণা করা যায়, মি. ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে কি হবে না, সে ব্যাপারে আগামী সোমবার নাগাদ একটা ভোটাভুটিতে যেতে পারে সেনেট। সূত্র:বিবিসি