ডিএমপি নিউজঃ সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে ও নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠায় ১ নভেম্বর ২০১৯ থেকে দেশব্যাপী কার্যকর হয়েছে সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮। এই আইন অমান্যকারীর যেমন কারাদণ্ডের বিধান আছে তেমনি গুনতে হবে বড় অংকের জরিমানা। মোটরযান আইন রহিত করে সড়ক পরিবহণ আইনটি কার্যকর হয়েছে। মোটরযান চালাতে হলে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। সেই সাথে গাড়ির ফিটনেস থাকাটা আবশ্যক। জেনে নেয়া যাক সড়ক পরিবহণ আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস না থাকলে কি সাজা জরিমানার বিধান রয়েছে।
কেন ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকাটা বাধ্যতামূলক?
সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ এর ৪ ধারায় মোটরযান চালনার ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকাটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই আইনে বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি ড্রাইভিং লাইসেন্স বা ক্ষেত্রমতে শিক্ষানবিশ ড্রাইভং লাইসেন্স ব্যতীত কোন মোটরযান পাবলিক প্লেসে চালাতে পারবেন না। এছাড়াও বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি যে শ্রেণী বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালনার লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছেন, সেই শ্রেণী বা ক্যাটাগরির মোটরযান ছাড়া অন্য কোন মোটরযান চালানো যাবে না। তবে এখানে শর্ত দেয়া হয়েছে ভারী যানবাহনের জন্য প্রাপ্ত ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী কোন ব্যক্তি হালকা ও মধ্যম শ্রেণী বা ক্যাটাগরির মোটরযান চালাতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে কি হবে?
ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা অবস্থায় যেকোন মোটরযান চালানো সড়ক পরিবহণ আইনের ৬৬ ধারায় দণ্ডনীয় অপরাধ। আপনি যদি উল্লিখিত আইন অমান্য করে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কোন পাবলিক প্লেসে মোটরযান চালান তাহলে সাজা হিসেবে আপনাকে অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
কে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত, প্রদান ও নাবায়ন করতে পারবেন?
সড়ক পরিবহণ আইনের ১০ ধারা মতে, কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএ ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সমিতি ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত, প্রদান বা নবায়ন করতে পারবে না এবং কোন ব্যক্তি কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স বিকৃত বা পরিবর্তন করতে পারবেন না। এছাড়াও কোন ব্যক্তি কোন নকল, ভুয়া বা জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করতে পারবেন না।
নকল, জাল ও ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করলে কি হয়?
মোটরযান চালাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকাটা বাধ্যতামূলক। সড়ক পরিবহণ আইনের ৬৯ ধারা লঙ্ঘন করে যদি কেউ মোটরযান চালানোর সময় নকল, জাল ও ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহার করেন তাহলে তিনি অনধিক ২ বছর তবে অন্যূন ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লক্ষ টাকা তবে অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
গাড়ির ফিটনেস থাকাটা কি আবশ্যক?
হ্যাঁ, গাড়ি চালাতে হলে অবশ্যই ফিটনেস থাকাটা জরুরী। সড়ক পরিবহণ আইনের ২৫ ধারায় বলা হয়েছে, মোটরযানের ফিটনেস সনদ ব্যতীত বা মেয়াদ উত্তীর্ণ ফিটনেস সনদ ব্যবহার করা, ইকোনোমিক লাইফ অতিক্রান্ত বা ফিটনেসের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ বা ক্ষতিগ্রস্ত, রংচটা, নির্ধারিত রং পরিবর্তন করা, জরাজীর্ণ, বিবর্ণ বা পরিবেশ দূষণকারী কোন মোটরযান চালানো যাবে না বা চালানোর অনুমতি প্রদান করা যাবে না।
ফিটনেস থাকার বিষয় অমান্য করলে কি হবে?
সড়ক পরিবহণ আইনে ৭৫ ধারা মতে যদি কোন ব্যক্তি মোটরযানের ফিটনেস সনদ না নিয়ে বা ২৫ ধারার বিধান লঙ্ঘন করে মোটরযান চালায় তাহলে তিনি অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডি হবেন।
সুতরাং মোটরযান চালানোর পূর্বে অবশ্যই আপনাকে নতুন কার্যকর সড়ক পরিবহণ আইন সম্পর্কে ধারণা থাকাটা জরুরী। সড়ক পরিবহণ আইনে বাধ্যবাধকতা ও কোন অপরাধে কি সাজা জানতে নিয়মিত চোখ রাখুন ডিএমপি নিউজে।
সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ দেখতে এখানে ক্লিক করুন