পিছিয়ে পড়া সব জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে তিন পার্বত্য জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানবিহীন ১০টি উপজেলায় নতুন ১০টি আবাসিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যমান ২৯টি হাই স্কুলে ৭৪টি ছাত্রী ও ছাত্রাবাস নিমার্ণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব প্রতিষ্ঠান স্থাপনে ‘তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আবাসিক ভবন নির্মাণ ও নতুন আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যয় হবে প্রায় ৬৯৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর (ইইডি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সরকারের ‘শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো’কে (ব্যানবেইস) দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য ব্যানবেইসকে এক প্রায় এক কোটি ৬৭ লাখ ২৪ হাজার টাকা দেওয়ার সিন্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশিষ্ট কর্মকর্তারা জানায়, ব্যানবেইসের মাধ্যমে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে নতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন, স্থাপনের স্থান, হোস্টেলের সংখ্যা, হোস্টেলের আসন সংখ্যা এবং হোস্টেল পরিচালনা ও টেকসইকরণ পদ্ধতি নিরুপণ করা হবে।
এছাড়াও প্রকল্প এলাকায় শিক্ষাখাতে যেকোন উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনার লক্ষে একটি নির্ভরযোগ্য তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা; নতুন স্থাপিতব্য আবাসিক বিদ্যালয় এবং হোস্টেলসমূহের পরিচালনা ও টেকসই পদ্ধতি বিশেষত জনবল, কস্ট শেয়ারিং ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নিরুপণ করবে ব্যানবেইস। ব্যানবেইসকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকল্প যাচাইয়ের কাজ শেষ করতে দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক বছর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে নির্দেশনা প্রদান করেন যে, ‘পার্বত্য অঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।’
এর পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউমি) অধিদফতর তিন পার্বত্য জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানবিহীন ১০টি উপজেলায় নতুন ১০টি আবাসিক বিদ্যালয় এবং বিদ্যমান ১৯টি সরকারি বিদ্যালয় ও ১০টি বেসরকারি মডেল বিদ্যালয়ের ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট ৩৬টি ছাত্রাবাস ও ৩৮টি ছাত্রীনিবাস নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৬৯৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ের সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে পার্বত্য জেলা পরিষদের সাথে সমন্বয় করে মাউশি অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য-উপাত্ত এবং ব্যানবেইসের তথ্য ব্যবহার করা হয়। এর আলোকে ইতোমধ্যে নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য ১১টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।