তীব্র শীতে কাঁপছে আমেরিকা। সাথে সাথে ঝড়ো হাওয়া। ‘বম্ব সাইক্লোন’-এর দাপটে কোথাও ঘণ্টায় ১১৩ কিলোমিটার বেগে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। কোথাও ঝড় থামলেও রাস্তায় উপর রয়ে গিয়েছে ফুট দুয়েক উঁচু বরফের স্তর! ঘূর্ণিঝড় আর শীতের কোপে এখনও পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
আশার আলো দেখাচ্ছেন না আবহবিদেরাও। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের বুলেটিন বলছে, আগামী রবিবার পর্যন্ত হিমাঙ্কের নিচেই থাকবে তাপমাত্রা। বাল্টিমোর ও সংলগ্ন এলাকায় আজ পারদ মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামতে পারে বলে আশঙ্কা।
সাইক্লোনের জেরে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে দেশের ৫টি প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তুষারঝড়ে আমেরিকার উত্তর-পূর্বে ক্যারোলাইনা, মিশিগান, ভার্জিনিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নিউ জার্সি, নর্থ ডাকোটা, রোড আইল্যান্ডের মতো বেশ কিছু স্টেটে প্রায় দেড় কোটি মানুষ গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তাঁদের বাইরে না-বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছেন আক্রান্ত সব প্রদেশের প্রশাসন। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস জানিয়েছে, বস্টন এবং লং আইল্যান্ডের উপকূলীয় এলাকায় ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। বরফ গলা জলে দীর্ঘ সময় ডুবে ছিল বস্টনের বেশির ভাগ রাস্তা।
বেহাল পরিস্থিতি দেশের উড়ান পরিষেবারও। সব চেয়ে খারাপ অবস্থা নিউ ইয়র্ক ও বস্টন বিমানবন্দরের। বৃহস্পতিবার বাতিল হয়েছিল হাজার পাঁচেক উড়ান। গত কালও প্রায় ১২০০ বিমান বাতিল করা হয়েছে। এখন যদিও পরিস্থিতি আয়ত্তে বলে দাবি করছে প্রশাসন। দুর্যোগে জেরবার বেশির ভাগ প্রদেশেই স্কুল আপাতত বন্ধ রাখছেন কর্তৃপক্ষ। সরকারি দফতরেও এখন হাজিরা দেওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কড়াক়ড়ি নেই। বেশ কিছু এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করে প্রশাসন সাবধান থাকতে বলছে সবাইকে।
এই দুর্যোগের মধ্যেই আবার কেউ-কেউ বেরিয়ে প়ড়ছেন ‘অ্যাডভেঞ্চারে’। বরফ ঝ়ড়ের পরোয়া না করেই চলছে ছবি তোলার হিড়িক। রাস্তা খালি পেলেই অনেকে আবার মাতছেন গতির নেশায়। বিপর্যয় সামাল দিতে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনীর অতিরিক্ত ৫০০ সদস্যকে নামানো হয়েছে উত্তর-পূর্ব উপকূলের বিভিন্ন শহরে।