ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর আদাবর বাজার এলাকায় চার মাস বয়সী শিশু সাদিয়াকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আদাবর থানা পুলিশ। শিশু সাদিয়া হত্যার অভিযোগে পারভিন (২৪) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৮ জুলাই) বেলা ১ টায় ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম-বার, পিপিএম-বার নিজ কার্যালয়ে এ বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানান।
ব্রিফিংয়ে ডিসি তেজগাঁও বলেন, শুক্রবার ৩ জুলাই অনুমান ১২ টার দিকে আদাবর থানার উত্তর আদাবর ৩৮/১০ পানির পাম্প এলাকায় চার মাস বয়সী একটি শিশুকে গলা কেটে হত্যার সংবাদ পায় পুলিশ। দ্রুততম সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ও শিশু সাদিয়ার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। চারমাস বয়সী শিশুর ওপর এম নিমর্মতা মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে ঘটনা তদন্ত শুরু করে। এ সংক্রান্তে ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
অপরাধী সনাক্ত ও গ্রেফতার সম্পর্কে ডিসি তেজগাঁও বলেন, পুলিশ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, প্রযুক্তি সহায়তা ও গোপন সূত্রের ভিত্তিতে ৫ জুলাই ভিকটিমের প্রতিবেশী পারভিনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকান্ডের বিষয়টি স্বীকার করেন। পূর্ব শত্রুতার জেরে পারভিন ব্লেড দিয়ে শিশু সাদিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে। পারভিনের দেখানো মতে তার ঘর থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ব্লেডটি উদ্ধার করে পুলিশ। ইতোমধ্যে পারভীন হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
হত্যাকান্ডের কারণ সম্পর্কে ডিসি তেজগাঁও বলেন, গ্রেফতারকৃত পারভিন একজন গৃহিনী। সে ৫ মাস পূর্বে ঢাকায় আসেন। তার স্বামী একজন রিক্সাচালক। ভিকটিম সাদিয়ার পিতা একজন দিন মজুর ও দাদা বস্তির ম্যানেজার। লকডাউন চলাকালে পারভিনের স্বামীকে বাসার সামনে ভিকটিমের দাদা কর্তৃক দোকান করতে না দেওয়া, পারভিনের সন্তানদের সাথে সাদিয়ার মায়ের খারাপ ব্যবহার ও গালিগালাজসহ তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বাদানুবাদ হতে শত্রুতা তৈরি হয়। আর এই শত্রুতার জের ধরে সাদিয়ার মাকে একটি উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে পারভিন। ঘটনার দিন ভিকটিমের মা ভিকটিমকে ঘুম পাড়িয়ে রান্না করতে গেলে পারভিন ঘরে ঢুকে ব্লেড দিয়ে সাদিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে। সে একাই এই নির্মম হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে।