পোস্ট অপারেটিভ কক্ষে থাকা সদ্য অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে আলাদা করা তোফা ও তহুরাকে মায়ের দুধ খেতে দিয়েছেন চিকৎসক।
দুজনই মায়ের দুধ খেয়েছেন। কান্না করেছেন। দশ মাস বয়সী শিশু যে ধরনের প্রাকৃতিক সাড়া দেওয়ার তাই দিচ্ছেন।
শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক শাহনুর ইসলাম বলছিলেন, বাচ্চা দুটি ভালো আছে। তবে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। যে ধরনের রেসপন্স দেখলে চিকিৎসকের ভাল লাগে। এই শিশু দুটি সেই ধরনের রেসপন্স করছে। আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও ভাল আছে। বাকিটা দোয়া করবেন।
তিনি বলেন, দর্শনার্থী যত কম আসবে। শিশু দুটির চিকিৎসার জন্য তত ভাল।
তারা পোস্ট অপারেটিভে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, যদি আইসিইউর প্রয়োজন হয়। আমরা দিবো। আইসিইউ তৈরি আছে।
তোফা ও তহুরার মা সাহিদা বেগম বলেন, বুধবার সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসকের অনুমতিতে দুই বাচ্চাকে তিনি বুকের দুধ খাইয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা অপারেশনের পর আলাদা করা হয় তোফা ও তহুরাকে। আলাদা করার আড়াই ঘণ্টা পর জ্ঞান আসে তাদের।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর জোড়া লাগানো শরীর নিয়ে জন্ম হয় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন ইউনিয়নের কৃষক রাজু মিয়া ও তার স্ত্রী শাহিদা বেগমের এই যমজ সন্তানের।
তোফা আর তহুরার পিঠের দিক থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত মেরুদণ্ডের হাড় সংযুক্ত ছিল। মাথা-হাত-পা আলাদা হলেও তাদের মলদ্বার ছিল একটি।
শাহনূর ইসলাম জানান, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এমন ঘটনাকে ‘পাইগোপেগাস’ বলা হয়।
জন্মের আট দিনের মাথায় শিশু দুটিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হলে প্রথমে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের মলদ্বার আলাদা করে কৃত্রিম ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
দীর্ঘ পরীক্ষা নিরীক্ষা ও প্রস্তুতির পর মঙ্গলবার সকালে তোফা ও তহুরাকে আলাদা জীবন দেওয়ার অস্ত্রোপচার শুরু করেন চিকিৎসকরা।