দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেত্রী শীলা দীক্ষিত মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে সম্প্রতি দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল শীলা দীক্ষিতকে। শনিবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানেই শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ৮১ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর।
দিল্লির যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন শীলা দীক্ষিত, সেখানকার চিকিৎসক অশোক শেঠ সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘‘চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন শীলা দীক্ষিত। দপুর ৩টে ১৫ মিনিট নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে। সেখানেই ৩টে ৫৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।’’
বর্তমানে দিল্লি কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন বর্ষীয়ান এই নেত্রী। দিল্লির সবচেয়ে বেশি সময়ের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর নজির রয়েছে। ১৯৯৮, ২০০৩ এবং ২০০৮ সাল পরপর তিন বার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হন শীলা দীক্ষিত। এরপর ২০১৩ সালে নির্বাচনে আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীবালের কাছে পরাজিত হন তিনি। যদিও সেখানেই তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার থেমে থাকেনি। বর্ষীয়ান এই নেত্রী ২০১৪ সালে কেরলের গর্ভনর করা হন। ওই বছরে মে-মাসে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে মোদী সরকার। আর অগস্টেই গভর্নর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। ২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীও করে। পরবর্তীকালে সেই পদ থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করেন শীলা দীক্ষিত।
১৯৩৮ সালে জন্ম অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাবে। পড়াশোনা দিল্লির কনভেন্ট অব জেসাস অ্যান্ড ম্যারি স্কুলে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক। তাঁর মৃত্যুতে টুইটে শোকবার্তা জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতি তাঁর শোকবার্তায় জানান, শীলা দীক্ষিতের সময় দিল্লি অভূতপূর্ব পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে, যা চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতার একটি ছবি দিয়ে জানান, দিল্লির উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর শোকবার্তায় জানান, উনি সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী থাকাকালীন একসঙ্গে কাজ করেছি। দারুণ সম্পর্ক ছিল তাঁর সঙ্গে। ওনার অভাব অনুভব করবো। রাহুল গাঁন্ধীও টুইটারে লেখেন, ‘কংগ্রেসের স্নেহভাজন কন্যা, ব্যক্তিগত ভাবে যাঁর ঘনিষ্ঠ ছিলাম, সেই শীলা দীক্ষিতজির প্রয়াণে বিধ্বস্ত আমি। তিন দফায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে গিয়েছেন। ওঁর পরিবার এবং দিল্লিবাসীকে সমবেদনা জানাই।’