ডিএমপি নিউজ: করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে সকল স্কুল প্রতিষ্ঠান গুলো। এই করোনা ভাইরসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিও সাত মাস পাঁচ দিন বন্ধ ছিল।নাট্যকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে একাডেমিটি খুলে দেওয়ার জন্য। নাট্যকর্মীদের দাবির মুখে অবশেষে শুক্রবার খুলে দেওয়া হয়েছে শিল্পকলা একাডেমির সব মিলনায়তন।
শুধু শিল্পকলাই নয়, নাটক সরণিখ্যাত বেইলি রোডের মহিলা সমিতিও খুলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আবারও সরব হয়ে উঠেছে সাংস্কৃতিক অঙ্গন। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নাট্যকর্মী ও দর্শনার্থীর পদচারণায় নতুন করে প্রাণ ফিরে পেল একাডেমির মঞ্চগুলো। সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে শরৎ উৎসবের রঙে প্রাণের উচ্ছ্বাস তৈরি হয় একাডেমিজুড়ে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় পালাকারের নাটক ‘উজানে মৃত্যু’। সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর উপন্যাস অবলম্বনে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন শামীম সাগর, এছাড়াও একই সময়ে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় জাগরণী থিয়েটার প্রযোজিত নাটক ‘রাজার চিঠি’। রবীন্দ্রনাথের শাহজাদপুরের স্মৃতিধন্য কাহিনি নিয়ে নাটকটি রচনা করেছেন মাহফুজা হিলালী। নির্দেশনা দিয়েছেন দেবাশীষ ঘোষ এবং স্টুডিও থিয়েটার হলে শুরু হয়েছে খেয়ালী নাট্যগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা একেএ কবীরের স্মরণে দুই দিনব্যাপী স্মরণানুষ্ঠান। দলের নিজস্ব প্রযোজনার নাটক ‘যুদ্ধ যুদ্ধ’, মৈত্রী থিয়েটারের ‘চা অথবা কফি’, উৎস নাট্যদলের ‘পতাকায় বঙ্গবন্ধু’ এই তিনটি নাটকের অংশবিশেষসহ এ উৎসবে আরও ছিলো গান, কবিতা ও স্মৃতিচারণ।
অন্যদিকে নাচ, গান, আবৃত্তিসহ নানা আয়োজনে বিকেলে একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে শরৎ উৎসবের আয়োজন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। অসিত বিশ্বাসের এসরাজ বাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শরত নিয়ে হেমন্তকালের এই আয়োজন। গান, যন্ত্রসংগীত, আবৃত্তি ও নৃত্য দিয়ে সাজানো ছিল শরৎ উৎসব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। সুরের মূর্ছনা, নৃত্যের ঝঙ্কার ও আবৃত্তির দীপ্ত উচ্চারণে হৈমন্তী সন্ধ্যায়ও গোটা মিলনায়তনে মূর্ত হয়ে ওঠে শারদীয় আবহ। দীর্ঘদিন পর মঞ্চে নাটক উপভোগ ও শিল্পীদের নৃত্য-গীতের ঝঙ্কার দর্শকদের মধ্যে ভিন্ন এক ভালোলাগার সৃষ্টি করে।
সাংস্কৃতিক এই প্রাণের উৎসবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। নিজ নিজ প্রযোজনায় রূপদান করেছে নাটকের দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।