বিপদে পড়লেই চিকিৎসা করেন তিনি। কোনও রোগীকেই ফেরান না। বদলে পারিশ্রমিক নেন বটে, তবে যা নেন তা না নেওয়ারই মত। মাত্র ২ টাকা। গত ৪০ বছর ধরে এটাই তাঁর ফি। একদিকে যখন, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ, তার মধ্যে এই চিকিৎসকের উদারতা কিছু আশার আলো দেয় তো বটেই। আজও তাহলে বেঁচে আছে মানবিকতা।
ভারতের চেন্নাইয়ের ব্যাসারপদীর বাসিন্দা থিরুভেঙ্গাদাম বীরারাঘবন। মানুষ যাতে সুলভে চিকিৎসা করাতে পারে, এই জন্যই নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন তিনি। আদর করে তাঁর রোগীরা ডাকেন ‘২ টাকার ডাক্তারবাবু’।
স্ট্যানলে মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেন তিনি। ২ টাকা নিয়েই রোগী দেখা শুরু করেন। একসময় রোগীরাই চাপ দিয়েছিলেন, যাতে ডাক্তারবাবু এত কম টাকা না নেন। সবার অনুরোধে-উপরোধে তিনি পাঁচ টাকা নেওয়া শুরু করেন। প্রতিবেশীরা তাঁকে অনুরোধ করেন যাতে অন্তত ১০০ টাকা ভিজিট নেন। এসব শুনে ভিজিট নেওয়াই বন্ধ করে দেন ওই চিকিৎসক। কেউ হয়ত তাঁকে খাবার-দাবার দিয়ে চলে যান। কখনও সেটা নেন, কখনও নেন না। তবে আর টাকা চান না তিনি।
সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত তাঁর এরকানচেরির চেম্বারে পড়ে লম্বা লাইন। এমনকি ১০টার পরও রোগী দেখেন তিনি। একটি কর্পোরেট হাসপাতালের অ্যাসোসিয়েট ফেলো হিসেবে পাওয়া টাকাতেই চালিয়ে নেন তিনি।
তাঁর স্বপ্ন ব্যাসারপদী এলাকায় বস্তিবাসীদের জন্য একটি হাসপাতাল গড়তে চান তিনি। আমরণ সেখানেই মানুষের সেবা করে যাবেন তিনি। আর সঙ্গে থাকবে তাঁর স্ত্রী সরস্বতী। দুই ছেলে-মেয়েও সেখানেই চিকিৎসা করাতে চান। তাঁরা দু’জনে মরিশাসে মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করেন।