পিলারের ওপর সুপার স্ট্রাকচার (স্প্যান) বসানোর মধ্যদিয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হলো। আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে এই স্প্যান বসানো হয়। প্রথম স্প্যান বসানোর ফলে এখন থেকে নিজের রূপ পেতে থাকবে পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের জনসংযোগ কর্মকর্তা শেখ ওয়ালিদ জানান, সকাল আটটার দিকে পিলারের ওপর তিন হাজার ২০০ টন ওজনের একটি স্প্যান বসানো হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে স্প্যানটি বসাতে আরো সময় লাগবে। এখন পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ৪৭ শতাংশ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, মাওয়া প্রান্ত থেকে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্প্যানটি ভাসমান ক্রেনে করে জাজিরা প্রান্তে আনা হয়। সুপার স্ট্রাকচারটি বসানোর জন্য শুক্রবার বেয়ারিংয়ের কাজ করা হয়। বেয়ারিং সেতুর ভূকম্পন রোধ করে এবং ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করে থাকে। পিলারের সাটারিং খোলা ও অন্যান্য ফিনিশিংযের কাজও শেষ। কংক্রিটের শক্তি ৫০ মেগা প্যাসকেল অর্জন হয়ে থাকলে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে শীর্ষে বসবে তিন হাজার ২০০ টন ওজনের সুপার স্ট্রাকচার স্প্যান।
প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা নাসির টিপু জানান, অক্টোবরেই আরও চারটি স্প্যান বসানো হবে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তিনি সুপার স্ট্রাকচার স্থাপন কাজ পরিদর্শন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন যুক্তরাষ্ট্র্রের ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন।
পদ্মা সেতু প্রকল্প বিশ্বে একটি মাইলফলক বলে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, কর্মরত প্রকৌশলীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মেধায় পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হওয়া শুরু হলো। কর্মরত সবাই এর অংশ হিসাবে থাকতে পেরে গর্বিত মনে করছে। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এযাবৎকালে দেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এতে মোট ৪২টি পিলার থাকবে, যার ৪০টি নির্মিত হচ্ছে নদীতে এবং দুটি নদীর তীরে।