ডিএমপি নিউজঃ চৌকস, পেশাদার ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পুলিশ অফিসার নবনিযুক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম (বার), পিপিএম কে সংবর্ধনা প্রদান করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
রবিবার (১৬ অক্টোবর ২০২২) সকালে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়াম, রাজারবাগে ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম(বার) এর সভাপতিত্বে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিএমপির পক্ষ থেকে নবনিযুক্ত আইজিপিকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন ডিএমপি কমিশনার। এর আগে প্রথমে মোটরকেড ও পরে সুসজ্জিত অশ্বারোহী দল আইজিপিকে অভ্যর্থনা জানায়। এরপর তিনি সশস্ত্র অভিবাদন গ্রহণ করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারগণ অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য প্রদান করেন।
বক্তারা আইজিপির দীর্ঘ কর্মময় জীবনের বর্ণাঢ্য স্মৃতি চারণ করে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান হিসেবে আপনার যোগদান, আশা, আকাঙ্খা ও নব উদ্দ্যমে নতুন দিগন্তের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। আপনার কর্মজীবনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার স্মাক্ষর রেখেছেন।
বক্তরা আরও বলেন, আপনার বিচক্ষনতা, দক্ষতা ও অপরাধ দমনে আপনার ভূমিকা বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য অবগত। বাংলাদেশ পুলিশের পথ প্রদর্শক নবনিযুক্ত আইজিপির হাত ধরে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখার কথা বলে বক্তরা বক্তব্য শেষ করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নবনিযুক্ত আইজিপি বলেন, পুলিশ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছে বলেই বর্তমানে দেশে স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা বিরাজ করছে। এ কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা পার্শ্ববর্তী অনেক দেশকে পেছনে ফেলে বহু সামাজিক সূচকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হয়েছি।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর সেবার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ৯৯৯ এ প্রতিদিন প্রচুর কল আসে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষ আমাদের সেবা পেয়ে থাকেন। ৯৯৯ জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এ ধরনের একটি সার্ভিস পুলিশকে দেয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, থানাকে জনগণের আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। থানার দরজা কখনো বন্ধ হয় না, ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। থানায় আগত মানুষের কথা সহানুভূতির সাথে শোনতে হবে। পুলিশের প্রতি জনগণের যে ভালোবাসা তৈরি হয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি আরও বাড়াতে হবে।
করোনাকালে চরম মানবিক সংকটে নিকটজন যখন লাশ ফেলে রেখে চলে গেছে বাংলাদেশ পুলিশ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই লাশ দাফনসহ মানুষের পাশে দাড়িয়েছে, সেবা দিয়ে গেছে। সেবা দিতে গিয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে।
আইজিপি বলেন, পুলিশের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। আমরা কাজ করছি বলেই আমাদের কাছে জনগণের আশার মাত্রা আকাশচুম্বী হয়েছে। মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আমাদেরকে সচেষ্টা থাকতে হবে।
চমৎকার এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ডিএমপিকে ধন্যবাদ জানিয়ে আইজিপি বলেন, ডিএমপি বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট। ডিএমপি অক্লান্তভাবে পরিশ্রম করে। ডিএমপি যেভাবে কাজ করে তা দেশি-বিদেশি সকল মানুষের কাছে দৃশ্যমান থাকে। ডিএমপি যেভাবে তাদের কাজ করছে আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সেই কাজে সহায়তা অতীতের ন্যায় অব্যাহত থাকবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম(বার) ডিএমপি পরিবারের পক্ষ থেকে আইজিপিকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে মহানমুক্তি যুদ্ধের প্রথম প্রহরে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ এই রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকেই করা হয়েছিলো। তাঁদের আত্মত্যাগের কথা আমরা মনে রেখে কাজ করে থাকি।
বাংলাদেশ পুলিশে যতটুকু অর্জন তার অবদান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এমন একজন মানুষকে বাছাই করে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব দিয়েছেন, এজন্য কমিশনার আল্লাহ্তালার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
কমিশনার বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ মানুষের জন্য কাজ করে। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ববোধ ডিএমপির আছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ ভাল কাজ করলে সারা দেশ ভাল চলে। ডিএমপি এ গর্ব ও ভালবাসা নিয়ে কাজ করে থাকে। ঢাকা মহানগরে কোন অপরাধ সংগঠিত হলে ডিএমপির অফিসাররা তা উদঘাটন না করা পর্যন্ত ক্ষান্ত হন না।
তিনি বলেন, আপনি যেমন সমগ্র চাকরি জীবনে একটিও নেগেটিভ প্রশ্নের সম্মুখিন হননি, তেমনি ডিএমপি বাংলাদেশ পুলিশের সর্ববৃহৎ ইউনিট হওয়া সত্ত্বেও এমন কোন কাজ করবে না যাতে আপনার মর্যাদাহানিকর হয়। আপনার নেতৃত্বে যেকোন পরিস্থিতিতে ইস্পাত কঠিন প্রত্যয় নিয়ে ডিএমপি কাজ করবে। ডিএমপির যেকোন ভাল উদ্যোগে আইজিপি ডিএমপির পাশে থাকবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম, বিপিএম(বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান, বিপিএম(বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বিপিএম (বার), পিপিএম; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম(বার); যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ সকল পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।