ডিএমপি নিউজঃ আজ ০৭ ফেব্রুয়ারি’১৮ বুধবার বেলা ১২ টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম-বার, পিপিএম তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক অনানুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বলেন, আগামী ৮ তারিখে একটি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে আমরা বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরণের গুজব, নানা ধরণের শংকার কথা শুনেছি। বিষয়টা এটি আমাদের অবগতিতে আছে এবং এই বিষয়টা নিয়ে আমরা চিন্তা করেছি। এই ধরণের তথ্যাদি পাওয়ার পরে অবশ্যই নগরবাসীকে রক্ষার জন্য, সরকারী সম্পদ রক্ষার জন্য আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। ইতিমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি আমরা গ্রহন করেছি। এটাকে কেন্দ্র করে সরকারের অন্যান্য যে সমস্ত সংস্থা রয়েছে তাদের সাথে সমন্বয় করা হয়েছে। আমরা এই ব্যাপারে সম্মানিত নগরবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, কোন ব্যক্তিই আইনের উর্ধ্বে নয়। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কোনভাবেই সম্মানিত নাগরিকদের নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করতে পারবে না, নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারবে না। জ্বালাও পোড়াও ও ভাংচুর করতে পারবে না। সে জন্য আইনী যত ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন আমরা সবধরণের পদক্ষেপ গ্রহন করবো নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য। এ জন্য আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে পুরো শহর জুড়ে।
কমিশনার আরো বলেন, কোন গণ গ্রেফতারের ঘটনা নেই, যদি থাকে এই ধরণের কোন অভিযোগ আমার কাছে দেন আমি সে অভিযোগটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব। গত ৩০ জানুয়ারি হাই কোর্টের বিপরীতে দোয়েল চত্বরে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর নির্মমভাবে আক্রমন করা হয়। পুলিশের হেফাজত থেকে ২ জন আসামীকে ছিনিয়ে নেয়া হয় এবং ৭ জন পুলিশকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। তারা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশের ব্যবহৃত অস্ত্রকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং ফিল্মি স্টাইলে ফ্লাইং কিকসহ পুলিশকে শতশত লোকমিলে কিভাবে পিটাচ্ছে এটা আপনারা দেখেছেন। এর আরো ১৫ দিন আগে হাইকোর্টের মাজার বটতলায় গেটের এখানেও কর্তব্যরত পুলিশের ওপর নির্বিচারে ঢিল, পাটকেল মারা হয়েছে। অনেক গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। সেখানে মামলা নেওয়া হয়েছে। সেই ভিডিও ফুটেজগুলো আমাদের আছে। অতীতে যারা এই ধরণের ‘ল লেসনেস’ করেছে, ভাংচুর করেছে, মানুষের প্রতি নির্যাতন করেছে, জ্বালাও পোড়াও করেছে। সেই সমস্ত মামলার আসামীদের সুস্পষ্ট তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে এবং ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে গ্রেফতার করা হচ্ছে।
জনগনের জন্য যিনি হুমকি সৃষ্টি করবে, যিনি অশান্তি সৃষ্টি করবে, অরাজক পরিবেশের সৃষ্টি করবে তাকে গ্রেফতার করবো আমরা এবং সেখানে গণ হয়রানির কথাটা নিতান্তই একটা অজুহাত। আমি মনে করি আমাদের এই ভালো কাজটিকে বিতর্কিত করা এবং দৃষ্টিকে অন্যদিকে সড়িয়ে দেওয়ার একটি অপকৌশল।
ইতিমধ্যে কোন কোন টেলিভিশনে আপনারা দেখেছেন যে, কোন কোন জায়গা থেকে বলেছে এটি অনুপ্রবেশকারী। কিন্তু আপনারা জানেন ইতিমধ্যে আমরা ৩ জনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে ধরেছি। তারা একটি দলের নেতা, কর্মী প্রমান রয়েছে। প্রযুক্তি মিথ্যা বলে না, ভিডিও ফুটেজ মিথ্যা বলে না, দেখা যাচ্ছে সেই তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে এবং তারা অকপটে সবকিছু স্বীকার করেছে। বিজ্ঞ আদালতে তাদেরকে প্রসিড করা হবে। সুতরাং এই বিতর্কে না গিয়ে আমরা বলবো ২০১৪-১৫ সালে যেভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদকে পোড়ানো হয়েছে, সাধারণ মানুষের উপর আক্রমন করা হয়েছে, অগ্নিসন্ত্রাস, বোমা সন্ত্রাস করা হয়েছে এটির যে কোন ধরণের অপতৎপরতা কঠোর হাতে দমন করার জন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে জনগণকে সুরক্ষার জন্য আমরা সবধরণের উদ্যোগ নিব, সবধরণের আইনী ব্যবস্থা নিব। কোন ভাবেই সম্মানিত নাগরিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোন সুযোগ আমরা দিব না ইনশাল্লাহ।
আমাদের অতীত অভিজ্ঞতার কথা যদি বলি, আমরা ২০১৩ সালে ২০১৪ সালে এবং ২০১৫ সালে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯২ দিন যে নজিরবিহীন সহিংসতা হয়েছে, যে নাশকতা হয়েছে এটা আমরা জানি। এই অভিজ্ঞতার আলোকে এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেই না। তাবে সেটাকে প্রতিরোধ করার জন্য এবং জনগণকে রক্ষা করার জন্য আমাদের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে।