ডিএমপি নিউজঃ চলছে ‘ নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ’ ২০১৯। এ উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন থানা পুলিশের উদ্যোগে অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং জননিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে থানা এলাকার বাড়ি/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংরক্ষণ ও সিআইএমএস এর মাধ্যমে এন্ট্রি নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং জননিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের বড় বড় শহরে নাগরিক তথ্য সংরক্ষণ এবং বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে এই তথ্য ব্যবহার করার নিয়ম আছে। প্রাথমিকভাবে বাড়ি, স্থাপনা, প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে সংগৃহীত তথ্য হোল্ডিং নম্বর, রোড নম্বর এবং মহল্লা ভিত্তিক বোর্ড ফাইলে প্রতি থানায় সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু এভাবে সংগৃহীত তথ্য প্রয়োজনের সময় খুজেঁ বের করে ব্যবহার করা কষ্ট সাধ্য। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে তথ্যের বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চত করা সম্ভব না। এজন্য একটি যুগোপযোগী সফটওয়ার প্রয়োজন হয়। এ লক্ষ্যে তৈরি করা হয় একটি সফটওয়ার যার নাম দেওয়া হয় Citizen Information Management System বা CIMS।
আপনার তথ্য থানায় জমা দিন, পুলিশকে সহায়তা করুন, নিজে নিরাপদ থাকুন অন্যকে নিরাপদে রাখুন। সন্ত্রাস, উগ্রবাদ এবং অপরাধের হুমকি থেকে এই মহানগরীর মানুষকে সুরক্ষিত রাখুন। এ লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা মহানগরে বসবাসরত সম্মানিত নগরবাসীর তথ্য সংগ্রহের জন্য শুরু হয় ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ ২০১৯’।
১৫ জুন থেকে শুরু হওয়া নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ চলবে ২১ জুন পর্যন্ত। ডিএমপি’র ৫০টি থানার ৩০২টি বিট থেকে একযোগে সংগৃহীত হচ্ছে নাগরিক তথ্য সংগ্রহ ও হালনাগাদ কার্যক্রম। এই নাগরিক তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে পুলিশকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়েছে ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
গত ১৫ জুন’১৯ শনিবার বেলা ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ ২০১৯’ উদ্বোধনকালে নগরবাসীর প্রতি এমন আহবান জানান তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এমন কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছে নগরবাসীরা। নগরবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এ কার্যক্রম আরো বেগবান হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি থানা এলাকায় থানা পুলিশের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে থানা এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও সাধারণ জনগন। থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সেমিনার, উঠান বৈঠক, র্যালী ও প্রচারণার মাধ্যমে থানা এলাকায় বসবাসরত সকল শ্রেনীর নাগরিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে উগ্রবাদ, পেশাদার সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ীসহ যে কোন ধরনের অপরাধীর তথ্য পুলিশকে দিতে অনুরোধ জানানো হয়। সেই সাথে থানা এলাকায় বসবাসরত যে সকল নাগরিক এখন পর্যন্ত বাড়িওয়ালা/ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম পূরন করেন নাই, বা হালনাগাদ করেন নাই, তাদের অতি দ্রুত বাড়িওয়ালা/ভাড়াটিয়া তথ্য ফরম পূরন পূর্বক থানায় জমা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়।
নাগরিক তথ্য সংগ্রহ সপ্তাহ উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন থানা এলাকায় এর উপকারিতা নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালায় পুলিশ। পুলিশের এ প্রচারণা মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে টিম ডিএমপি’র সদস্যরা। এ কাজে সহযোগীতা করছে সাধারণ জনগণও।
সিআইএমএস নিবন্ধিত হলে এর তথ্য সংগ্রহে পুলিশ বিভিন্ন বাড়ি ও স্থাপনা নিয়মিত পরির্দশন করে। ফলে জঙ্গি ও সংঘবদ্ধ অপরাধীদের পক্ষে মহানগর এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে অপরাধ পরিচালনা দুরুহ হয়ে পড়েছে। এ কারণে জঙ্গি কার্যক্রম ঢাকা মহানগরী এলাকায় কার্যকর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। সংগৃহীত তথ্যের ব্যবহারের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ও ক্লু-লেস অনেক অপরাধ উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার সম্ভব হয়েছে। নাগরিকের বিভিন্ন বিপদে/আপদে এ তথ্য ব্যবহারের মাধ্যমে সল্প সময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং প্রতিকার দেয়া সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং ক্রাইম ট্রেন্ড, জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনগণকে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতন করা সম্ভব হয়েছে।
বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের সংগ্রহের মাধ্যমে ঢাকা মহানগরীর নাগরিক নিরাপত্তায় এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। এর ফলে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পর অপরাধীকে দ্রুত সনাক্ত করা এবং আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। নগরবাসী তথা দেশের নিরাপত্তায় গৃহীত এ পদক্ষেপ আরো বেগবান করার জন্য সম্মানিত মহানগরবাসীর এ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।