ডিএমপি নিউজ: নারী পুলিশের পোশাক নীতিমালা ও বাংলাদেশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক (BPWN) স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ২০২১-২৩ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক ((BPWN)) ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
বুধবার (১০ নভেম্বর) ১১ টায় রাজধানীর উত্তরায় হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কনফারেন্স রুমে হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকা ইসলাম, বিপিএম এর সভাপতিত্বে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় মূল আলোচকরা নারী পুলিশের পোশাক নিয়ে দ্বিধান্বিত না থেকে বরং আধুনিকভাবে দুই হাত মুক্ত রেখে নিয়ম মেনে আত্মবিশ্বাসের সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য বলেন। শরীরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটু ঢিলেঢালা পোশাক তৈরির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। বিভিন্ন ছবি প্রদর্শন করে কোনটি সঠিক আর কোনটি সঠিক নয় সে বিষয়েও নিদের্শনা দেয়া হয়।
বাংলাদেশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক (BPWN) এর সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চ এর ডিআইজি (প্রটেকশন এন্ড প্রটোকল) আমেনা বেগম, বিপিএম কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি তাঁর অলোচনায় বলেন, ২০০৮ সালের প্রতিষ্ঠিত BPWN আজ এই পর্যায়ে উপস্থিত হয়েছে। স্ট্র্যাটেজিক প্লান ২০২১-২৩কে কেন্দ্র করে BPWN প্রতিবছর কাজ করে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং ২০২৬ সালে এসে যাতে কেউ নারী পুলিশ-পুরুষ পুলিশ নয়, প্রত্যেকেই পুলিশ অফিসার হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়াও বিভিন্ন র্যাংকের নারী পুলিশের পদায়ন ও অপারেশনাল কাজে অধিকতর নারী পুলিশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও কোন নারী পুলিশ কর্মক্ষেত্রে কোন ধরনের হয়রানি শিকার হলে অবশ্যই ‘আইজি কমপ্লেইন্ট সেল’ এ জানানোর জন্য অনুরোধ করেন তিনি।
বাংলাদেশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক (BPWN) এর সহ-সভাপতি ও ডিএমপি, ঢাকার যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (ট্রান্সপোর্ট) শামীমা বেগম, পিপিএম কর্মশালায় নারী পুলিশের পোশাক নীতিমালা, কর্মক্ষেত্রে হয়রানি প্রতিরোধ ও বাংলাদেশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক ((BPWN)) স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ২০২১-২৩ বিষয়ক বিস্তারিত আলোচনা উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ পুলিশকে উদ্দেশ্য করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে কথাগুলো বলেছেন সেটি যেন যথাযথভাবে পালন করা হয়। সেই সাথে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) যে পাঁচটি নির্দেশনা (দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, মাদক নির্মূল, অমানবিক ও অপেশাদার আচরণ বন্ধ, বিট পুলিশিং ও পুলিশের সার্বিক কল্যাণ) দিয়েছেন সেটি যথাযথভাবে পালন করতে হবে। ড্রেস রুল-২০০৪ কে মূল রেখে নারী পুলিশের পোশাকে কিছু সংযোগ করা হয়েছে এবং এই নীতিমালা বর্তমানে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণআলয়ে আছে। বিশেষত পূর্বে হিজাব পরিধানকারীরা বিভিন্ন রং এবং বিভিন্নভাবে হিজাব পরিধান করত। বর্তমান নীতিমালায় হিজাব পরিধানের নিয়মাবলি দেয়া হয়েছে। তাছাড়াও চুলের আকার অনুযায়ী কিভাবে চুল বাধবে যে নিদের্শনাও দেওয়া আছে এবং ইউনিফর্মে থাকাকালীন অবস্থায় কোন অলংকার বা প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। গর্ভাবস্থায় কেমন পোশাক হবে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান গুলোতে সাদা পোশাক কিভাবে পড়তে হবে সেটিও আলোচনা করেন তিনি।
উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মল্লিক ফখরুল ইসলাম, বিপিএম, পিপিএম।
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করে কর্মশালায় বক্তব্য শুরু করেন প্রধান অতিথি। তিনি BPWNকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “আমাদের পোশাক আমাদের অহংকার। তাই এমন ভাবে চলব যেটি দেখে বোঝা যায় আমরা বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিনিধিত্ব করছি। আমরা মনে রাখব আমরা নারী বা পুরুষ নই আমরা বাংলাদেশের পুলিশ। ভবিষ্যতে যে ধরণের ব্যারাক নির্মাণ করা হবে সেখানে অবশ্যই নারী পুলিশের বিষয়টিকে প্রধান্য দেয়া হবে। বিভিন্ন স্কুল কলেজে গিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। যৌন হয়রানিতে জিরো টলারেন্স”।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উইমেন্স নেটওয়ার্ক (BPWN) এর সভাপতি ও স্পেশাল ব্রাঞ্চ এর ডিআইজি (প্রটেকশন এন্ড প্রটোকল) আমেনা বেগম, বিপিএম। বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট থেকে আগত নারী পুলিশ কর্মকর্তাগণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও হাইওয়ে পুলিশের নারী কনস্টেবলগণ ও হাইওয়ে পুলিশের ঢাকার বাইরের ইউনিট সমূহ Zoom App এর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়।