প্রথম তিন ম্যাচ জিতে সিরিজ জেতা হয়ে গিয়েছিল আগেই। এরপর চতুর্থ ম্যাচে চূড়ান্ত ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল ভারত। কিন্তু সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া। ওয়েলিংটনে পঞ্চম তথা সিরিজের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৩৫ রানে পরাজিত করল ভারত।
ওয়েলিংটনে টসে জিতে এদিন প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। রোহিতের নেতৃত্বাধীন একাদশে এদিন তিনটি পরিবর্তন আনে ভারতীয় দল। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট সারিয়ে দলে ফেরেন ধোনি। বোলিংয়ে খলিলের পরিবর্তে দলে ফেরেন মহম্মদ শামি। কুলদীপের পরিবর্তে বিজয় শংকরকে ফেরানো হয় দলে। তবে হ্যামিলটনে ব্যাটিং বিপর্যয়ের স্মৃতি উসকে দিয়ে ওয়েলিংটনেও দ্রুত চার উইকেট খুঁইয়ে বসে ভারত। ১৮ রানের মধ্যে ফিরে যান প্রথম সারির চার ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যর্থ তরুণ শুভমন গিল। প্রথম ম্যাচে ৯ রানের পর এদিন ৭ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন গিল।
দুই অঙ্কের রানে পৌঁছতে ব্যর্থ অধিনায়ক রোহিত শর্মা, আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান কিংবা মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রথম সারির ব্যাটিং লাইন-আপের ব্যর্থতার পর পঞ্চম উইকেটে বিজয় শংকরের সঙ্গে জুটি বেঁধে ভারতীয় ইনিংসে ভরসা জোগান চার নম্বরে নামা রায়ডু। পঞ্চম উইকেটে মূল্যবান ৯৮ রান যোগ করে হাফসেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দূরে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন শংকর। এরপর কেদার যাদবের সঙ্গে জুটি বেঁধে ষষ্ঠ উইকেটে ৭৪ রান যোগ করেন রায়ডু। সেইসঙ্গে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ধীরে ধীরে শতরানের দিকে এগিয়ে যান ব্যাটিং লাইন-আপের চার নম্বর ব্যাটসম্যান।
কিন্তু শতরান থেকে ১০ রান দূরে থামে রায়ডুর ইনিংস। ৩৪ রানে আউট হন যাদব। তবে মারকাটারি ইনিংসে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যান হার্দিক পান্ডিয়া। ২২ বলে পান্ডিয়ার ৪৫ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ৫টি ছক্কায়। মূলত শেষদিকে পান্ডিয়ার জন্যই ২৫০ রানের গন্ডি পেরোয় ভারত।
২৫৩ রানের লড়াকু টার্গেট ছুঁড়ে দেওয়ার পর বল হাতে ফের একবার নিজেদের প্রমাণ করলেন ভারতীয় বোলাররা। ৩৭ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে নিউজিল্যান্ড শিবিরে প্রাথমিক ধাক্কা দেন মহম্মদ শামি। এরপর টেলরকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন পান্ডিয়া। চতুর্থ উইকেটে ৬৭ রান যোগ করে উইলিয়ামসন-ল্যাথাম জুটি। তবে ৩৯ রানের মাথায় কেদার যাদবের বলে অধিনায়ক আউট হতেই ধস নামে নিউজিল্যান্ড শিবিরে।
৩৭ রানে চাহালের শিকার হন ল্যাথাম। এরপর নিশম কিছুটা চেষ্টা চালালেও ৪৪ রানে ধোনির দুরন্ত রান আউটের শিকার হতে হয় তাকে। এরপর ভারতীয় বোলিং ব্রিগেডের সামনে দলের পতন রোধ করার মত কোন টেল এন্ডার ছিলেন না নিউজিল্যান্ড শিবিরে। শেষ অবধি ৪৪.১ ওভারে ২১৭ রানেই গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। ৩৫ রানে ম্যাচ জিতে ৪-১ সিরিজ জয় নিশ্চিত করে টিম ইন্ডিয়া।
ভারতের হয়ে এদিন সবচেয়ে সফল বোলার চাহাল নেন তিনটি উইকেট। দু’টি করে উইকেট ঝুলিতে নেন শামি-পান্ডিয়া। একটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার ও কেদার যাদব। ব্যাট হাতে বিধ্বংসী ৪৫ রানের পর বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি উইকেট তুলে নেন পান্ডিয়া। তবে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝে মিডল অর্ডারে এদিন স্তম্ভ হয়ে দাঁড়ান রায়ডু। তার ১১৩ বলে অনবদ্য ৯০ রানের জন্য ম্যাচ সেরা হয়েছেন তিনি।