নীলফামারীতে রসালো সুস্বাদু ফল মাল্টা চাষের মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ছে একই সাথে অনেকেই তৈরি করেছেন বাণিজ্যক বাগান। পাশাপাশি জেলা কৃষি বিভাগ ১০০টি মিনি বাগান (২০ শতক জমির) তৈরির জন্য বারি-১ জাতের ৬০টি করে চারা প্রদান করেছেন ১০০ জন কৃষককে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, এ জেলায় সমতল ভূমিতে মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জেলার ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের কাঁঠালতলী গ্রামে সৌদিআরব প্রবাসী এস এম আব্দুল্লাহ ৬০ বিঘা জমিতে মাল্টাসহ বিভিন্ন ফলের বাণিজ্যিক চাষ শুরু করেছেন। অন্যান্য ফলের পাশাপাশি সাত বছর আগে রোপণ করা হয়েছিল বিভিন্ন জাতের ৫০টি মাল্টার চারা। দুই বছর বয়সে গাছে ফল আসতে শুরু করে। এখন প্রতিটি গাছ ফল দিচ্ছে দুই মণের উর্ধ্বে। প্রতিমণ মাল্টা বিক্রি হচ্ছে চার হাজার টাকা দরে।
তিনি বলেন,‘মাল্টার ফল দেখে অনেকে আগ্রহী হচ্ছেন মাল্টা চাষে। আমরা ওই গাছ থেকে এখন চারা তৈরি করে বিক্রি করছি। গত দুই বছরে বিক্রি করেছি ছয় হাজার চারা। পাশাপাশি বাগানে আরও রোপণ করা হয়েছে সাড়ে ছয়শ গাছ। সেখান থেকে অন্তত একশ গাছ ফল দিচ্ছে।’
বাগানের ম্যানেজার ওমর ফারুক (৩২) বলেন,‘বারি-১সহ পাকিস্তানি, নাগপুরী, দার্জিলিং, মরক্কো, ইরানি জাজের মাল্টার গাছ আছে। ফলের পাশাপাশি ওই গাছ থেকে চারা তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘এলাকায় মাল্টার ফলন দেখে অনেকে বাণিজ্যিক চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। এলাকার পাশ্ববর্তী পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার টোকরাভাসা গ্রামের মাফফুজ রেজা একশ চারা কিনে বাগান করেছেন।
ওই বাগান পরিদর্শন করে নীলফামারী ব্র্যাকের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন,‘আমরা আয় ও কর্মসংস্থানের জন্য শিল্পের দিকে ঝুঁকে পড়ছি। কিন্তু পরিবেশ বান্ধব কৃষি খামার গড়েও আয় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায় সেটি তারই একটি উদাহরণ।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, জেলাটি শীত প্রধান হওয়ায় ছয় উপজেলার উঁচু বেলেদোআশ মাটিতে মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। এমন সম্ভানায় অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেছেন। এর মধ্যে ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের কাঁঠালতলী গ্রামের পঞ্চনীল নার্সারী এবং মিশ্র ফলের বাগানের মালিক এসমএম আব্দুল্লাহ বাণিজ্যক চাষ করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবুল কাশেম আযাদ বলেন, জেলায় মাল্টা চাষের সম্ভাবনা দেখে বারি-১ জাতের মাল্টার ১০০টি মিনি বাগান করার জন্য রাজস্ব খাত থেকে প্রতি চাষিকে ৬০টি করে চারা প্রদান করা হয়েছে এবছর। তাঁরা ২০ শতক করে জমিতে ওই ৬০ চারা রোপণ করবেন। কৃষি বিভাগ তাদেরকে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে। ইতিমধ্যে যাঁরা চাষ শুরু করেছেন তাদেরকেও কারিগরি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।