বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে. পি. শর্মা ওলি’র সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। আজ (বৃস্পতিবার) সকালে কাঠমান্ডুতে বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী সাত দেশের জোট বিমসটেকের চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে নেপালে পৌঁছেন শেখ হাসিনা। নেপালে পৌঁছার পরই দ্বিপক্ষীয় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টুইটার বার্তায় জানানো হয়েছে।
এর আগে স্থানীয় সময় আজ সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান বাংলাদেশের। বিমানবন্দরে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখারেল এবং নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশরাফি বিনতে শামস।
বিমানবন্দরে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে দেয়া হয় লালগালিচা সংবর্ধনা। এসময় তাকে গার্ড অব অনারও দেওয়া হয়। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে প্রধানমন্ত্রীকে নেওয়া হবে তার সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল সোয়ালটি ক্রাউনি প্লাজায়। এই সফরে তিনি সেখানেই থাকছেন।
বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন বা বিমসটেক হল বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী সাত দেশের একটি জোট। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড ১৯৯৭ সালে ব্যাংকক ঘোষণার মধ্য দিয়ে এ উদ্যোগের সূচনা করে। পরে মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান বিমসটেকে যোগ দেয়।
ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়াকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছে বিমসটেক, কাজ করছে সার্ক ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃআঞ্চলিক সহযোগিতার একটি সেতুবন্ধ হিসেবে। জোটভুক্ত সাত দেশের নেতারা বিকেলে কাঠমান্ডুতে এই সম্মেলনে অংশ নেবেন। সম্মেলনের উদ্বোধনে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর স্বাগত বক্তব্যের পরপরই বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ঠিক হয়েছে ‘শান্তির, সমৃদ্ধির, টেকসই বে অব বেঙ্গলের লক্ষ্যে’।
প্রধানমন্ত্রীর নেপাল সফর সামনে রেখে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বুধবার ঢাকায় এক ব্রিফিংয়ে বলেন, সম্মেলন অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাদা বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ হবে।
এই সম্মেলনে জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বিমসটেক গ্রিড যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা এবং ফৌজদারি ও আইনি বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানকে যুদ্ধাপরাধ বিবেচনা করার পর বড় ধরনের আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমার। দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি এবার বিমসটেক সম্মেলনে থাকছেন না। তার বদলে মিয়ানমারের প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট।