ইরান বলেছে, মার্কিন চাপের মুখে ২০১৫ সালের পরমাণু সমঝোতারা ধারা বাস্তবায়ন করতে ইউরোপ ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বে তেহরান উত্তেজনা জিইয়ে রাখতে চায় না এবং তারা আলোচনার পথ খোলা রেখেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি আজ (বুধবার) বলেছেন, তার দেশ পরমাণু সমঝোতার প্রতি অবিচল থাকবে এবং একই সময়ে নিজের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে। তিনি বলেন, বাস্তবতার আলোকে যদিও ইরান এই কৌশলগত নীতি গ্রহণ করেছে তবে তেহরান কূটনীতির পথ বন্ধ করে দেয় নি এবং আলোচনার দরজা সব সময় খোলা রেখেছে।
ইরানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের সর্বোচ্চ উপদেষ্টা ইমানুয়েল বন তেহরান অবস্থান করছেন তখন এসব মন্তব্য করেন মুখপাত্র মুসাভি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছর একতরফভাবে তার দেশকে পরমাণু সমঝোতা থেকে সরিয়ে নিয়ে তেহরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তেহরান-ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠে। পাশাপাশি পরমাণু সমঝোতার ভবিষ্যৎ নিয়েও আশঙ্কার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ এক শতাব্দির কূটনৈতিক আলোচনার ফসল পরমাণু সমঝোতাকে বাঁচাতে এবং তেহরান-ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে ম্যাকরনের উপদেষ্টা তেহরান সফর করছেন মনে করা হচ্ছে।
ইরান শুরু থেকেই বলে আসছে যে পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলো যদি এ সমঝোতা মেনে চলে তাহলে তেহরানও এটি মেনে চলবে।
ইরান গত চার বছর ধরে পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করলেও ২০১৮ সালের মে মাসে আমেরিকা এটি থেকে অন্যায়ভাবে বেরিয়ে যায়। এরপর ইউরোপ ইরানকে এ সমঝোতা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও তা পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। পশ্চিমা দেশগুলোর এ ন্যক্কারজনক আচরণের প্রতিক্রিয়ায় ইরান গত ৮ মে পাশ্চাত্যকে ৬০ দিনের সময়সীমা বেধে দিয়ে বলেছিল, এ সময়ের মধ্যে ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। তা না হলে তেহরান এ সমঝোতায় নিজের দেয়া কিছু প্রতিশ্রুতি পালন স্থগিত রাখবে। তেহরানের দেয়া সে সময়সীমা গত ৭ জুলাই শেষ হওয়ার পর ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। খবর পার্স টুডে।