গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন কৃষি জমি বাদ দিয়ে নগর ও পল্লী এলাকায় পরিকল্পিতভাবে গৃহ নির্মাণ করার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি আজ রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘হাউজিং ফাইন্যান্স ফর পিপল লিভিং ইন আরবান পোভার্টি’ শীর্ষক জাতীয় কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান। ব্র্যাক আরবান ডেভেলপমেন্ট ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
দেশের মোট ৮১ শতাংশ ঘরবাড়ির মধ্যে ৮০ শতাংশই নিম্নমানের এ কথা উল্লেখ করে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে গ্রামে যত্রতত্র বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এরফলে প্রতিদিন ২৩৫ হেক্টর কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। এটা কোনভাবেই দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তিনি বলেন, গ্রামেও এখন বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে কৃষিজমি রক্ষা করতে হবে। কৃষি জমি সুরক্ষার জন্য নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে।
মন্ত্রিসভায় এ আইনের বিষয়ে ইতোমধ্যে নীতিগত অনুমোদন পাওয়া গেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন,এ আইন পাস হলে গ্রামে বাড়ি করতেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
ব্র্যাকের সিনিয়র কর্মকর্তা আসিফ সালেহর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান খন্দকার আখতারুজ্জামান, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরে পরিচালক ড. খুরশীদ জাবিন হোসেন তৌফিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন,নগরদারিদ্রের শিকার বস্তিবাসীদের জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে। মিরপুরের বাউনিয়ায় ১০ একর জমির ওপর বস্তিবাসিদের জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মান করা হবে। এরমধ্যে ৫৫০টি ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ শিঘ্রই শুরু করা হবে। খুব অল্প ও সহজে পরিশোধযোগ্য ভাড়াভিত্তিতে এসব ফ্ল্যাটে বস্তিবাসীরা থাকবেন।তিনি বলেন, দারুস সালামে হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বস্তিবাসিদের জন্য আরো এক হাজার ৫৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে এবং বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ৩টি জেলার ১৯টি বস্তিতে ৫ হাজার ৭০০ পরিবারের জন্য উন্নত আবাসন সুবিধা গড়ে তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর দেশের ১৪টি উপজেলার বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর ও কুয়াকাটাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আরে সাতটি উপজেলার বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, কৃষি জমি সুরক্ষায় পর্যায়ক্রমে গোটা দেশের বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। বস্তিবাসীর উন্নয়নে ঢাকা মহানগরসহ দেশের যেকোন জেলায় বহুতল ভবন নির্মাণে ব্র্যাক ও যে কোন বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এলে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে বস্তিবাসীর জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, ব্র্যাক ও ইউএনডিপি’র তিনটি আবাসন মডেল উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপিত আবাসন মডেলের মডারেটরের দায়িত্ব পালন করে মেয়র্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভাইসপ্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান।অংশগ্রহণকারীরা এসব মডেলের ওপর আলোচনা-পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে সুপারিশমালা উপস্থাপন করবেন। কনভেনশনে রাজশাহী ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনাবিদ, বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র ও সরকারি কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।