ডিএমপি নিউজঃ কর্মব্যস্ত শহর ঢাকা। এখানে ব্যস্ত জীবন থেকে একটু বিরতি নিয়ে প্রশান্তি ভরে দম নেয়ার তেমন কোনো জায়গা নেই বললেই চলে। ইট, কাঠ, কংক্রিটের এই শহরে এক টুকরো সবুজের দেখা মেলা ভার। তাই সাপ্তাহিক ছুটিতে অথবা যেকোনো সরকারি ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতির কাছাকাছি কোনো জায়গা থেকে। এমনই একটি জায়গা হলো মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট। এছাড়াও আপনি যদি সকালে গিয়ে সারাদিন মাস্তি করে বিকেলে ঢাকায় ফিরে আসার কথা ভাবেন তাও আপনার জন্য মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট।
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি গ্রামে অবস্থিত। প্রায় ৩০ বিঘা জায়গাজুড়ে মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট (Meghna Village Holiday Resort) গড়ে তোলা হয়েছে। ঢাকার থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টার দূরত্ব। প্রথম মেঘনা ব্রিজ পার করলেই পৌছে যাবেন এই রিসোর্টে। কিছুক্ষণের জন্য ব্যস্ততার কথা ভুলে নিশ্চিন্তে যেতে পারবেন সবুজের মাঝে। পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবের সাথে সুন্দর সময় কাটাতে পারবেন মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা এই রিসোর্টে। বিনোদনের নানা আয়োজনে ভরপুর এই রিসোর্ট।
যা দেখতে পাবেন:
এ রিসোর্টের প্রবেশ ফটকের শুরুতেই রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাণীর ভাস্কর্য। তারপর প্রবেশ পথ পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলেই শান্ত সুন্দর পরিবেশের মুগ্ধতা। মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টের কুটিরগুলোকে নেপালি ঢঙে তৈরী করা হয়েছে।
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে আগত অতিথিদের জন্য রয়েছে ১০টি এসি/ নন এসি কটেজ, চিকিত্সা সেবা, লন্ড্রি, সুভ্যেনির শপ, নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থা, বাংলা ও চাইনিজ খাবার, বার বি কিউ, পিকনিক আয়োজন এবং মাছ ধরার ব্যবস্থা। আর খেলাধুলার জন্য রয়েছে দুইটি বিশাল খেলার মাঠ।
রিসোর্টের মিনি চিড়িয়াখানায় আছে বানর, চিত্রা হরিণ, কালিম পাখি, খরগোশ, লজ্জাবতী হনুমান, কোয়েল পাখি, কুমিরসহ বিভিন্ন প্রাণী। এছাড়া রিসোর্টে বিভিন্ন বিনোদন রাইডের মধ্যে আছে পেন্ডুলাম পাইরেট শিপ, মেরিগো রাউন্ড, প্যাডেল বোট, ব্যাটারী কার, নাগরদোলা, সাইকেল চালনা এবং মিকি মাউস বাইক। তবে এই রাইডগুলো উপভোগ করতে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা হারে ফি প্রদান করতে হয়। আর ২০ আসনের ৩ডি সিনেপ্লেক্সে ঢুকতে খরচ হবে জনপ্রতি ৩০ টাকা।
কিভাবে যাবেন:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকা প্রান্তে ১ম মেঘনা ব্রীজের পর ১কিলোমিটার পার হলে পৌঁছে যাবেন এ রিসোর্টে।
পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত –
(১) ঢাকার গুলিস্থানের ভাষানী হকি স্টেডিয়ামের সামনে থেকে বোরাক এসি বাস সার্ভিসে মেঘনা ঘাটে নেমে সেখান থেকে ভবেরচরগামী লোকাল বাস “গজারিয়া পরিবহনে” মেঘনা ভিলেজে আসুন। ভাড়া টাকা ৬৫.০০ হতে পারে।
(২) গুলিস্থানের “আহাদ পুলিশ বক্সের” পাশে BRTC স্ট্যান্ড থেকে দাউদকান্দি/গৌরীপুরগামী BRTC বাসে সরাসরি মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে মেঘনা ব্রীজ পার হয়ে বালুয়াকান্দি বাস স্ট্যান্ডে তথা আমাদের রিসোর্টের সামনে নামা যায়। দাউদকান্দি গামীবাসের ভাড়া টাকা দাউদকান্দি- ১১০ টাকা, গৌরীপুর -১২০ টাকা।
(৩) ঢাকার হাটখোলার রাজধানী সুপার মার্কেটের পূর্ব পার্শের পেট্রোল পাম্প থেকে কুমিল্লাগামী তিশা, এশিয়া পরিবহন কিংবা ফেনীগামী স্টারলাইন পরিবহনে মেঘনা ভিলেজ স্ট্যান্ডে নামা যায়। ভাড়া টাকা ২০০-৩০০ টাকা।
সব বাসেই এক ঘন্টার জার্নি। ফেরত বাস সর্বক্ষন ।বাস থেকেই রিসোর্ট এর রিসেপশনে 01718471961 নং ফোনে কথা বলতে পারেন।
রেন্ট–এ–মাইক্রোবাসঃ ঢাকা শহরস্থ যে কোন এলাকা থেকে রিসোর্টে আসতে রিসোর্ট এর ১৪ সিটের হাইএস মাইক্রোবাস নিতে পারেন। ভাড়া মাত্র ৪০০০.০০ টাকায়। রিসোর্ট কল দিলে আপনার বাসায় পৌছে যাবে মাইক্রোবাস।
টিকেট মূল্য:
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং শিশু-কিশোরদের প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। সুইমিং পুলে ২ ঘন্টা সাতার কাটার জন্য এন্ট্রি ফি জনপ্রতি ২৫০ টাকা। মেহলিস ডাইনিং রেস্তোরায় বাংলাদেশী কুজিনে লাঞ্চ প্যাকেজের মূল্য জনপ্রতি ৩৫০ টাকা।
এছাড়া রিসোর্ট এন্ট্রি, পুল এন্ট্রি, আনলিমিটেড সুইমিং এবং বাংলাদেশী কুজিন লাঞ্চের প্যাকেজ মুল্য জনপ্রতি ৫৯৯ টাকা।
প্রবেশ সময় : সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত।
রিসোর্টের রুম ভাড়া
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরণের প্যাকেজ চালু থাকে। তাই বর্তমান প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে রিসোর্টের ওয়েবসাইট চেক করুন অথবা অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বারেও কল করতে পারে। চলুন জেনে নেই রিসোর্টের বর্তমান রুম ভাড়ার বিস্তারিত।
সুপিরিয়র কাপল রুম – ২ টি (কামিনী ও রজনীগন্ধা):
ডে-লং: ৭০০০ টাকা
ডে-নাইট: ৮০০০ টাকা
নাইট: ৬৫০০ টাকা
এক্সট্রা বেড জনপ্রতি ৫০০
প্রিমিয়ার কাপল সূট – ৪ টি (এসি)
ডে-লং: ৬,৫০০ টাকা
১রাত/১দিন: ৭,৫০০ টাকা
নাইট: ৪,৫০০ টাকা
সুপিরিয়র হানিমুন সুট (কুঞ্জলতা)
ডে-লং: ৮,০০০ টাকা
১রাত/১দিন: ৯,৫০০ টাকা
নাইট: ৬,০০০ টাকা
ডিলাক্স কাপল স্যুট – নন–এসি ২ টি (হাসনাহেনা ও গন্ধরাজ)
ডে-লং ভাড়া: ৪৫০০ টাকা
১রাত/১দিন ভাড়া: ৫০০০ টাকা
নাইট-লং ভাড়া: ৪০০০ টাকা
প্রিমিয়ার ফ্যামিলি রুম
ডে-লং ভাড়া: ৬৫০০ টাকা
১রাত/১দিন ভাড়া: ৭৫০০ টাকা
নাইট-লং ভাড়া: ৪৫০০
ডে-লং রুম ভাড়া নিলে চেক-ইনের সময় সকাল ৯ টা এবং চেক আউটের সময় বিকাল ৫ টা।
১রাত/১দিন ভাড়া নিলে চেক-ইনের সময় সকাল ৯ টা এবং চেক আউটের সময় পরদিন সকাল ৮ টা।
নাইট-লং রুম ভাড়া চেক-ইনের সময় সন্ধ্যা ৬ টা এবং চেক আউটের সময় পরদিন সকাল ৮ টা।
(সকল ভাড়া পরিবর্তনশীল, কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেকোন সময় কম বেশি হতে পারে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থাঃ
রিসোর্টঃ চারদিকে উচ্চ দেয়াল ও তার ওপর কাটাতারের ব্যারিয়ার সহ দিন-রাতে আমাদের সর্বক্ষন সক্রিয় নিরাপত্তা কর্মীদের নিবির টহল ও সেই সাথে সার্ভিলেন্স ক্যামেরার সূক্ষ্ম দৃস্টি আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে করেছে নিছ্ছিদ্র। এছাড়া স্থানীয় থানার একটি টহল দল রাতে আমাদের রিসোর্টে নজরদারী করে। অবান্ছিত ব্যাক্তিদের আমাদের রিসোর্টে প্রবেশ নিশেধ।
কারপার্কঃ সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা কর্মী দিনের বেলায় কারপার্কে নিয়োজিত থাকে। রাতে অতিথিদের গাড়ী রিসোর্ট অভ্যন্তরে রাখা হয়।
যোগাযোগ
পিকনিক বুকিং এর জন্য রিসোর্ট কিংবা ঢাকা অফিসে করতে পারেন।
ঢাকা অফিসঃ সুট ২০২ (দোতালা),স্বজন টাওয়ার-১,৪ সেগুন বাগিচা, বারডেম হাসপাতালের অপর পার্শে, ঢাকা-১০০০, ফোন-৯৫৭০৭৮২, ০১৫৫২৩৩৩৫৬৩