ডিএমপি নিউজ রিপোর্ট: ‘নতুন করে আর কেউ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার সুযোগ পাবে না’- মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।’ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে প্রশ্ন নিয়ে পাবলিক পরীক্ষা দেওয়ার প্রমাণ পেলে শিক্ষার্থীর ফল বাতিল করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এসএইচসি) পরীক্ষার নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে মনিটরিং করছে। ইতোমধ্যে নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও অনেকে নজরদারিতে রয়েছেন। প্রমাণ পেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্ট হয়েই ব্যবস্থা নেব। তিনি ছাত্র হোন, টিচার হোন বা অভিভাবক হলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। সংখ্যা যত বড় হোক, যত বড় অপারেশন করা দরকার, প্রয়োজনে অর্ধেক হাত কেটে ফেলতেও রাজি আছি। আর ক্যানসার বহন করতে পারছি না।’
সভায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) উপকমিশনার (ডিসি-উত্তর) শেখ নাজমুল আলমের উদ্দেশে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন বলেন, ‘(প্রশ্ন ফাঁসের ক্ষেত্রে) যারা ফেসবুক অ্যাডমিন বা যারা এর সঙ্গে লিঙ্কড আছেন তিনি যদি ছাত্র হন তার ইনফরমেশন আমাদের দরকার। আগামীতে যদি এমন কোনো প্রমাণ পাই যে, কোনো ছাত্র এভাবে পরীক্ষা দিয়েছে তার রেজাল্ট বাতিল করতে চাই।’
তখন শেখ নাজমুল আলম বলেন, ‘সেই তথ্য আমরা দেব।’ তিনি জানান, ‘এ বছর পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে গুজবের প্রেক্ষাপটে গত ২ মাসে মোট ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা হয়েছে ৩টি। এর মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাডমিন রয়েছেন। এদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে একটি রিপোর্ট দেব। স্কুল, কলেজ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা মন্ত্রণালয় নেবে।’
শিক্ষা সচিব আরও বলেন, ‘জাতি গঠনে আগামী প্রজন্ম যদি এভাবে নষ্টের দিকে এগিয়ে যায়, আমরা যদি প্রতিরোধ করতে না পারি তবে এর দায়-দায়িত্ব আমরা কোনোমতেই এড়াতে পারব না।’
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘গত ৩ তিন বছর ধরে বিজি প্রেস থেকে সরাসরি প্রশ্ন ফাঁসের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন নিয়ে যাওয়ার যাতায়াতের পক্ষেও আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এরপর যে জায়গা আমাদের শিক্ষক, তাদের হাতে দিলেই আমরা নিশ্চিত যে আমাদের দায়টা গেল। সেই শিক্ষকদের কাছে গিয়ে যখন আমরা এ রকম একটি পরিস্থিতিতে পড়ি যে তারা প্রশ্ন প্রচারের সঙ্গে স¤পৃক্ত হয়ে যান। তারা শিক্ষক নামের কলঙ্ক। সন্তানের প্রশ্ন পাওয়ার ক্ষেত্রে অভিভাবক যুক্ত হয়ে যান। তখন আমাদের আর যাওয়ার জায়গা থাকে না।’
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এসএম ওয়াহিদুজ্জামান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আগামী ২ এপ্রিল রোববার শুরু হচ্ছে ২০১৭ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। দেশের আটটি সাধারণ বোর্ড, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডে একযোগে এ পরীক্ষা শুরু হবে।
সূচি অনুযায়ী আটটি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২ এপ্রিল শুরু হয়ে এ পরীক্ষা চলবে ১৫ মে পর্যন্ত। এইচএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষে পরদিন ১৬ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।