পর্যটক শূন্য কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে নানা ধরনের লতাজাতীয় উদ্ভিদে এখন পাতা ও ফুল ফুটতে শুরু করেছে। নির্জনতার সুযোগে সাগরলতা সৈকত পাড়ে বালুরাশি আটকে সৃষ্টি হচ্ছে ফুলগাছ। অতীতের ঢেউ এর আছড়ে পড়ায় মাটির ক্ষয়রোধ এবং শুকনো উড়ন্ত বালুরাশিকে আটকে আবারও বড় বড় বালির পাহাড় বা বালিয়াড়ি তৈরির মূল কারিগর হিসেবে প্রমাণ করতে যাচ্ছে সাগরলতা। তাই সাগরলতাকে বলা হয় সৈকতের রক্ষাকবচ।
কিন্তু পর্যটন শিল্পের কারণে দখল ও দূষণের শিকার হয়ে গেল ৩ দশক ধরে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সৈকতের বড় বালিয়াড়িগুলো প্রায় হারিয়ে গেছে। ধীরে ধীরে সমুদ্রতীর ভাঙনের শিকার হয়ে হাজার হাজার একর ভূমি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে। আর এখন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারনে সৈকতে জনমানব শূন্য। আর এজন্য বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও জলজপ্রাণী দেখা যাচ্ছে।
এ সুযোগে সেই বিধ্বস্ত প্রকৃতি আবার পুনর্গঠিত হচ্ছে। কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মাত্র এক দশক আগেও সৈকতজুড়ে গোলাপি-অতিবেগুনি রঙের ফুলে ভরা সৈকতে এক অন্যরকমের সৌন্দর্যময় পরিবেশ ছিল। সেই পরিবেশের কথা ভেবে শহরের অনেক বাসিন্দা ও পর্যটক এখন শুধুই আক্ষেপ করেন। কিন্তু সেই সুযোগটিই এখন এনে দিয়েছে করোনা ভাইরাস সতর্কতা। নির্জন সৈকতের বিভিন্ন স্পটে গিয়ে চোখে পড়ে সাগরলতা যেনো আবারও আপন গতিতে প্রকৃতি পুনরুদ্ধারে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে আবারও গোলাপি-অতিবেগুনি রঙের ফুল ফুটতে শুরু করেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সৈকতের পরিবেশ পুনরুদ্ধারে আমরা সাগরলতার বনায়ন ও সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। যা প্রকৃতি এখন আপন মনে গড়ে নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, করোনা নিষেধাজ্ঞার সুযোগকে পরিবেশগত পুনর্গঠনে কাজে লাগাতে হবে। সাগরলতা ও বালিয়াড়ি সংরক্ষণ করতে হবে। এসব বালিয়াড়ির প্রধান উদ্ভিদ হচ্ছে সাগরলতা।
এক সময় সাগরলতার গোলাপি-অতিবেগুনি রঙের ফুলে সৈকতে অন্যরকমের সৌন্দর্য তৈরি হতো। কিন্তু সাগরলতা ও বালিয়াড়ি হারিয়ে যাওয়ায় গত ৩ দশকে কক্সবাজার সৈকতের ৫০০ মিটারের বেশি ভূমি সাগরে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান পরিবেশবিদ বিশেষজ্ঞরা।