ডিএমপি নিউজ: গত ২৪ জুলাই, ২০২০ তারিখে পল্টনে পুলিশের উপর বোমা হামলার ঘটনায় নব্য জেএমবি’র এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গ্রেফতারকৃতের নাম আব্দুল্লাহ আল নোমান ওরফে আবু বাছির। সে নব্য জেএমবি’র সামরিক শাখার কমান্ডার। আব্দুল্লাহ আল নোমান কুমিল্লা জেলার নাঙ্গল কোর্ট থানার মেরকোট গ্রামের আবু তাহেরের পুত্র।
বুধবার (৩ নভেম্বর, ২০২১) সন্ধ্যা ৭:৩০ টায় রাজধানীর দারুসসালাম থানার মিরপুর মাজার রোড এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর, ২০২১) বেলা ১১:৩০ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মোঃ আসাদুজ্জামান, বিপিএম (বার)।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ আল নোমান নব্য জেএমবি’র বর্তমান সামরিক শাখার একজন সক্রিয় দায়িত্বশীল সদস্য। সে মূলত নব্য জেএমবি’র আমীর মাহাদী হাসান ওরফে জন এর নির্দেশে সামরিক শাখায় কাজ করতো। ২০১৭ সালে ফেইসবুকের মাধ্যমে দাওয়াত পেয়ে নব্য জেএমবিতে যোগদান করে এবং ফেইসবুকে সদস্য সংগ্রহসহ উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। সে টেলিগ্রাম চ্যানেল ও বটের মাধ্যমে নব্য জেএমবি’র অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে সংগঠনের সামরিক শাখার কাজ পরিচালনা করতো।
তিনি বলেন, সংগঠনের অপর সদস্য আবু মোহাম্মদ এর নির্দেশে আব্দুল্লাহ আল নোমান ঢাকার মান্ডা এলাকায় এককভাবে রুম ভাড়া করে। আবু মোহাম্মদ তাকে আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বানানোর ভিডিও টেলিগ্রাম অ্যাপসের মাধ্যমে পাঠায়। আইইডি তৈরির ভিডিও দেখে সে এই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে এবং পরবর্তীতে আবু মোহাম্মদ, আব্দুল্লাহ্ আল নোমান ওরফে আবু বাছির’কে আইইডি বানানোর জন্য টাকা প্রদান করলে সে ভিডিও দেখে আইইডি তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে এবং আইইডি তৈরি করে। আব্দুল্লাহ আল নোমানকে তার পছন্দমত এলাকায় উক্ত আইইডি দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলার নির্দেশ দেয়া হয়। উক্ত নির্দেশ পাওয়ার পর পল্টন এলাকাটি তার পূর্ব পরিচিত ও চাকরির স্থান হওয়ায় সে উক্ত স্থানটি বেছে নেয়। পল্টন মোড়ের পুলিশ চেকপোস্টের আশেপাশে সিসি ক্যামেরা না থাকায় উক্ত স্থানটি রেকি করে। গত ২৪/০৭/২০২০ খ্রিঃ তারিখ তার তৈরিকৃত আইইডি পুরানা পল্টন মোড়ের পুলিশ চেকপোস্টের সামনে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সংক্রান্তে পল্টন থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছিলো।
তিনি আরও বলেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান ওরফে আবু বাছির ২০১৮ সালে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট কর্তৃক গ্রেফতার হয়েছিলো। সে ০১ বছর ০৩ মাস পরে জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় নব্য জেএমবি’র সাথে সক্রিয় হয়।
গ্রেফতারকৃতকে দশ দিনের পুলিশ রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোঃ ইলিয়াছ শরীফ, বিপিএম(বার), পিপিএম এর নির্দেশনায় এবং উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আব্দুল মান্নান, বিপিএম এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়।