পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক অন্যান্য প্রচলিত ব্যাংক থেকে আলাদা। এই ব্যাংক সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে আয়বর্ধক কর্মকান্ডে যুক্ত হতে সহায়তা করে এবং সঞ্চয় গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করে। এ ছাড়াও এ ব্যাংক সদস্যদের সঞ্চয় থেকে আবর্তিত ঋণ স্কিমের আওতায় তাদের ঋণ দেয়।
এই মার্চেই দেশের প্রত্যেক উপজেলায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (পিএসবি)-এর শাখা খোলা হচ্ছে। হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করা এবং জামানতবিহীন ঋণ দানের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
‘ব্যাংকটি ইতোমধ্যেই সারাদেশের ৪০৬টি উপজেলায় কার্যক্রম শুরু করেছে। আগামী মাসের মধ্যেই বাকি সব উপজেলাতেও এ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।’
গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী বিশেষত : নারী উদ্যোক্তাদের প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবার আওতায় নিয়ে আসাই এই ব্যাংকের মূল লক্ষ্য। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই ব্যাংক দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে জামানতবিহীন ঋণ দিচ্ছে।
এই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ ‘একটি বাড়ি একটি খামার (ইবেক)” প্রকল্পের গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।
যেসব ক্ষেত্রে এই ব্যাংক ঋণ দেয় সেসব হলো গরু মোটাতাজাকরণ, কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র শিল্প, গাভী পালন, কুটির শিল্প, মৎস্য চাষ, নার্সারী, কৃষিভিত্তিক-শিল্পের জন্য নানা পণ্য উৎপাদন, শাক-সবজি এবং মশলা উৎপাদন।
ঋণ গ্রহিতাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনার ওপর ঋণের পরিমাণ নির্ভর করে। তবে সাধারণভাবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সর্বাধিক ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজর টাকা, মধ্যম উদ্যোক্তাদের ৫০ হাজার ১ টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা এবং বিশেষ উদ্যোক্তাদের ৩ লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা দেয়া হয়। এসব ঋণের সুদের হার ৮ শতাংশ।
ঋণ নেয়া ছাড়াও সদস্যরা এ ব্যাংকের সঞ্চয় প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন। সঞ্চয় প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- সাধারণ সঞ্চয়, বিশেষ সঞ্চয়, সামাজিক সুরক্ষা সঞ্চয়, ছাত্র সঞ্চয়, মেয়াদি আমানত এবং গ্রামীণ পেনশন স্কিম।
ব্যাংক আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের হাঁস-মুরগী পালন, মৎস চাষ, গবাদিপশু পালন, নার্সারী ও কৃষি খাতের বিভিন্ন আয়বর্ধক কার্যক্রমে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এ ছাড়াও তাদের উৎপাদিত পণ্য কার্যকরভাবে মজুত ও বিপণনের লক্ষ্যে গুদাম নির্মাণের জন্য ঋণ দিয়ে সদস্যদের সহায়তা করে।-বাসস