ডিএমপি নিউজঃ আর কয়টি দিন পরেই আসছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। ঢাকা মহানগরের প্রতিটি স্থান নিরাপদ করতে ও বাংলা নববর্ষকে ঘিরে অনুষ্ঠিত সকল অনুষ্ঠারের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত হচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
আজ সকাল ১১ টায় ডিএমপি সদর দপ্তরে আসন্ন বাংলা নববর্ষকে ঘিরে আয়োজিত সকল অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রদান ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় উপস্থিত থেকে সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
সভায় আগত সকলের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, বাংলা নববর্ষ বাঙালির প্রাণের উৎস। এই উৎসবকে ঘিরে থাকবে আমাদের কঠোর নিরাপত্তা বলয়। বিগত বছর গুলোতে দেখা গেছে পুরো ঢাকা শহর বৈশাখী মেলায় পরিণত হয়েছে। মানুষ নিরাপত্তা বোধ নিয়ে উৎসব উদযাপন করতে ঘর থেকে রাস্তায় এসেছে। পহেলা বৈশাখে সব বয়সী মানুষের সমাগম হয়।
তিনি বলেন, আমরা মানুষকে নিরাপদে রাখতে রমনা পার্ক কেন্দ্রীয় রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে থাকি। এই এলাকাগুলো নববর্ষের ‘হ্যাপি জোন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সম্মানিত নগরবাসী পুলিশকে সহযোগিতা করে চেকিং এর মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করেন। এজন্য তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
কমিশনার আরো বলেন, আপনারা অনেকে বলে থাকেন উৎসবকে ঘিরে আমরা বিধি-নিষেধ দিয়ে থাকি। এটা রাষ্ট্রের পক্ষে কোন বিধি-নিষেধ না। আপনাকে নিরাপত্তা দিতে আপনার মধ্যে নিরাপদ বোধ তৈরি করতে আমাদের এই উদ্যোগ। আপনারা দেখেছেন বাঙালি সাংস্কৃতির উপর অনেকবার আঘাত হেনেছে কিছু দুস্কৃতিকারী। তারা বাঙালি সাংস্কৃতিকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। অনুষ্ঠানের আয়োজক সংস্থা ও সকলের সহযোগিতায় পুলিশ সকল অনুষ্ঠানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিবে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে কমিশনার বলেন, যারা মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন, তারা চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে শোভাযাত্রায় অংশ নিবেন। পথের মধ্যে থেকে কোন অবস্থায় শোভাযাত্রার বেষ্টনীর মধ্যে ঢুকতে দেয়া হবে না। এছাড়াও কোন কোম্পানীকে তার পণ্যের বা কোম্পানীর বিজ্ঞাপন মঙ্গল শোভাযাত্রায় দিতে দেয়া হবে না।
এ সময় সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয় বিভিন্ন দিক নিয়ে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সকল অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য। থাকবে ওয়াচ টাওয়ার, টহল ডিউটি, ফুট পেট্রোলিং, লস্ট এন্ড ফাউন্ড সেন্টার, পুলিশের সাব কন্ট্রোল রুম, পুলিশ ব্লাড ব্যাংক ও প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, ডগ স্কেয়াড দিয়ে সুইপিং, সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ফায়ার টেন্ডার, এ্যাম্বুলেন্স, নৌ পুলিশের ডুবুরি দল, সমগ্র এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরা আওতায় আনা ইত্যাদি। সকল দর্শনার্থীকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও ম্যানুয়ালী চেকিং এর পর অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে দেয়া হবে।
এছাড়াও প্রতি বছরের ন্যায় ডিএমপি’র পক্ষ থেকে এবারও ফুল, বাতাশা ও মিষ্টি দিয়ে রমনা পার্কের প্রতিটি প্রবেশ গেটে দর্শনার্থীদের পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানানো হবে । তাছাড়াও বিনামূল্যে জনসাধারণের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে মিডিয়া ব্রিফিং এর মাধ্যমে আরো বিস্তারিত জনসাধারণকে অবহিত করবেন ডিএমপি কমিশনার।
সমন্বয় সভায় ডিএমপি’র ও বাংলাদেশ পুলিশ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, কন্ঠশিল্পী ফকির আলমগীর, ছায়ানট, সুরের ধারা, গোয়েন্দা সংস্থা ও সরকারি বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ।